ভারত: ৩৪৯-৮ (গিল ২০৮, রোহিত ৩৪)
নিউজিল্যান্ড: ৩৩৭ (ব্রেসওয়েল ১৪০, স্যান্টনার ৫৭)
ভারত ১২ রানে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথম ইনিংসে শুভমন গিলের অবিশ্বাস্য ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস এবং ভারতের পাহাড়প্রমাণ রান দেখে অনেকেই হয়তো ভেবে নিয়েছিলেন হায়দরাবাদ ওয়ানডেতে ভারতের জয় সময়ের অপেক্ষা। নিউজিল্যান্ড ইনিংসের অর্ধেকটা দেখার পরও মনে হয়েছিল অনায়াসে জয় আসবে ভারতের (Indian Cricket Team) ঝুলিতেই। কিন্তু তারপরই টুইস্ট। সব অঙ্ক গুলিয়ে দিলেন অখ্যাত ব্রেসওয়েল। না, দলকে জেতাতে পারলেন না তিনি। কিন্তু একার হাতের মরিয়া লড়াইয়ে কার্যত মৃত একটি ম্যাচকে জীবিত করে তুললেন। শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে রাখলেন দলকে। শেষে অবশ্য স্নায়ুর চাপ সামলে ১২ রানে ম্যাচ জিতল ভারত।
অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) আপাতত পরীক্ষানিরীক্ষার মুডে। আগে ব্যাট করলে জেতা কঠিন হবে জেনেও টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। গিলের সঙ্গে নিজে ব্যাট করতে এসে শুরুটাও ভালই করেন। প্রথম উইকেটের জুটিতে ভারত করে ৬০ রান। অধিনায়ক রোহিতকে এদিনও বেশ ঝকঝকে দেখাচ্ছিল, কিন্তু এদিনও ভাল শুরুর পর উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এলেন তিনি। লাগাতার এই ব্যর্থতা চিন্তায় রাখবে টিম ম্যানেজমেন্টকে। তবে রোহিত হতাশ করলেও হতাশ করেননি শুভমন গিল (Subhman Gill)। উলটে রীতিমতো অভাবনীয় কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন তিনি। ২০৮ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছেন তরুণ ওপেনার। সেই সঙ্গে গড়েছেন একাধিক রেকর্ডও।
[আরও পড়ুন: করোনা ভ্যাকসিনে শরীরে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া? ধোঁয়াশা দূর করে জবাব দিল কেন্দ্র]
শচীন তেণ্ডুলকর, বীরেন্দ্র শেহওয়াগ, রোহিত শর্মা, ঈশান কিষানের পর পঞ্চম ভারতীয় হিসাবে ওয়ানডেতে দ্বিশতরান করলেন গিল। গোটা বিশ্বের সপ্তম ক্রিকেটার হিসাবে এই নজিরের মালিক হলেন তিনি। সেঞ্চুরির হিসাবে ধরলে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচে এটি তরুণ ওপেনারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। এর মধ্যে শেষ দু’ম্যাচেই শতরান করেছেন তিনি। আর শুধু সেঞ্চুরি নয়, এদিন আরও একটি অভাবনীয় কীর্তি গড়ে ফেলেছেন টিম ইন্ডিয়ার (Team India) তরুণ তুর্কি। নিজের ওয়ানডে কেরিয়ারে এক হাজার রানের গণ্ডিও পেরিয়ে গিয়েছেন তিনি। তাও মাত্র ১৯ ইনিংসে। ভারতের দ্রুততম ক্রিকেটার হিসাবে এই কীর্তি গড়েছেন গিল। এর আগে ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত হাজার রানের গন্ডি পেরোনোর রেকর্ড ছিল যুগ্মভাবে বিরাট কোহলি (Virat Kohli) এবং শিখর ধাওয়ানের দখলে। তাঁরা এই কীর্তি গড়েছিলেন ২৪ ইনিংসে। গিলের এই অনবদ্য ইনিংসে ভর করেই ৩৪৯ রানের বিশাল ইনিং গড়ে ভারত। মিডল অর্ডারে ঈশান কিষান, সূর্যকুমার যাদব বা হার্দিক পাণ্ডিয়ারা সঙ্গত করলে আরও খানিকটা বেশি হতে পারত ভারতের স্কোর।
[আরও পড়ুন: ফাইনালে শেষ পেনাল্টির ঠিক আগে প্রয়াত ঠাকুমাকে স্মরণ! আকাশের দিকে তাকিয়ে কী বলেছিলেন মেসি?]
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি নিউজিল্যান্ডের। বিশাল লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমে ২৮ রানের প্রথম উইকেট খুইয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। টপ অর্ডারের কোনও ব্যাটারই সেভাবে রান পাননি। একটা সময় ১৩১ রানে ৬ উইকেট খুইয়ে কার্যত ম্যাচের আশা ছেড়েই দিয়েছিল কিউয়িরা। সেখান থেকে কার্যত একার হাতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ব্রেসওয়েল। অবিশ্বাস্য শতরান করে কিউয়িদের লড়াইয়ে ফেরান তিনি। একটা সময় মনে হচ্ছিল, গিলের দ্বিশতরান চাপা পড়ে যাবে ব্রেসওয়েলের নায়কোচিত ইনিংসে। কিন্তু অনবদ্য লড়াই করেও সঙ্গতের অভাবে দলকে জেতাতে পারলেন না তিনি। ১৪০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের ইনিংস শেষ হল ৩৩৭ রানে। ১২ রানে জয় পেল ভারত।