সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাকুম্ভে 'অমৃতস্নান' চলাকালীন ভয়াবহ দুর্ঘটনায় যোগী সরকারকে নিশানায় নিল বিরোধী শিবির। তাঁদের অভিযোগ, চরম অব্যবস্থার নজির মহাকুম্ভ। উত্তরপ্রদেশ সরকারকে নিশানায় নিয়ে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেন, 'আন্তর্জাতিক মানের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে ঢালাও প্রচার চালিয়েছিল যোগী সরকার। এবার আসল সত্য সকলের সামনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।' দুর্ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী।
![](https://mcmscache.epapr.in/mcms/434/a8a2c017e2b91afd0d2f9fd5d52ed44cbc32e704.jpg)
মৌনী অমাবস্যার ‘অমৃতস্নান’ উপলক্ষে বুধবার রাত্রি দুটো নাগাদ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে মহাকুম্ভে। স্নানের জন্য ঘাটে ভিড় জমিয়েছিলেন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী। সেখানেই ১১ থেকে ১৭ নম্বর খুঁটির মাঝে ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে যায়। যার জেরে পদপিষ্ট হন বহু মানুষ। অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। এই ঘটনার পর এক্স হ্যান্ডেলে সপা সাংসদ অখিলেশ যাদব লেখেন, 'মহাকুম্ভে আসা পুণ্যার্থী ও সাধু-সন্ন্যাসীদের আস্থা ফেরাতে এখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজ্য প্রশাসনের উচিত সেনার হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া।' পাশাপাশি তিনি জানান, 'সারা দেশজুড়ে প্রচার চালানো হয়েছিল মহাকুম্ভে আন্তর্জাতিক মানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবার আসল সত্যটা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। যারা এই মিথ্যা প্রচার চালিয়ে এসেছিল এই ঘটনার পর তাঁদের উচিত দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করা।'
পাশাপাশি অখিলেশ আরও লেখেন, 'মহাকুম্ভে চরম অব্যবস্থার জন্য পুণ্যার্থীদের হতাহত হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকারের কাছে আমার আবেদন, গুরুতর আহতদের এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের মাধ্যমে ভালো হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হোক। মৃতদের দেহ চিহ্নিত করে তা পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করুক সরকার। যারা একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন তাঁদের সাহায্যে সরকার এগিয়ে আসুক। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হোক। এবং সত্যযুগ থেকে চলে আসা এই অমৃতস্নান যাতে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় সরকার তার ব্যবস্থা করুক।'
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে যোগীর প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বার্তা দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, 'মহাকুম্ভে মর্মান্তিক পদপিষ্টের ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। ওই ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মৃত পুণ্যার্থীদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। গঙ্গাসাগর মেলা থেকে আমি শিখেছি যে বিশাল জনসমাবেশে যেখানে অসংখ্য পুণ্যার্থীদের জীবন জড়িত থাকে, সেখানে পরিকল্পনা এবং পরিষেবা সর্বোচ্চ পর্যায়ের হতেই হবে। মৃতদের আত্মার প্রতি শান্তিকামনা করছি।’
এই ঘটনায় ভিভিআইপি কালচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন রাহুল গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক গাফিলতি ও ভিভিআইপিদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জেরেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভিভিআইপিদের গুরুত্ব দিয়ে বাকিদের অবহেলা করার ঘটনায় বন্ধ করা উচিত বলে জানান তিনি। সাধারণ পুণ্যার্থীদের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে আরও ভালো ব্যবস্থাপনা করার আরজি জানিয়েছেন রাহুল। পাশাপাশি কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের কাছে তিনি আবেদন জানান, তাঁরা যেন কুম্ভে স্বজন হারানো পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ান ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
এছাড়াও দুর্ঘটনার পর এক্স হ্যান্ডেলে বার্তা দিয়েছেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি লেখেন, 'মহাকুম্ভে যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা প্রয়াত হয়েছেন তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। সব পুণ্যার্থীদের কাছে আবেদন আপনারা ধৈর্য ধরুন, প্রশাসনের নির্দেশ পালন করুন ও একে অপরের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিন।' পাশাপাশি দুর্ঘটনায় মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে বার্তা দিয়েছেন বহুজন সমাজবাদী পার্টির প্রধান মায়াবতী।