সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুজরাটে পরাজয় নিশ্চিত জেনে তাঁদের সঙ্গে ‘চুক্তি’র টোপ দিয়েছিল বিজেপি। শনিবার এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন আম আদমি পার্টির (AAP) প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁর দাবি, গেরুয়া শিবিরের শর্ত মেনে গুজরাটের ভোট থেকে ‘সরে দাঁড়ালে’, তাঁর দলের দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে বলে বিজেপি আশ্বাস দিয়েছিল। দিল্লির দুই আপ মন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া (Manish Sisodia) এবং সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছে।
এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে কেজরিওয়াল জানান, আপ ছেড়ে মণীশকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেয় প্রথমে। কিন্তু তিনি তা ফিরিয়ে দেন। তারপর বিজেপি তাঁর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে। প্রস্তাব পাঠায়। কী সেই প্রস্তাব? কেজরিওয়াল বলেছেন, “ওরা বলেছে, গুজরাট ছাড়ো। যদি তুমি গুজরাতের নির্বাচনে লড়াই না করো, তা হলে সত্যেন্দ্র জৈন এবং সিসোদিয়া, দু’জনকেই ছেড়ে দেব। তাঁদের বিরুদ্ধে সব চার্জও বাতিল করে দেব।” কে দিয়েছে প্রস্তাব? নিজের ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমেই প্রস্তাব এসেছে বলে তাঁদের নাম জানাতে অস্বীকার করেন কেজরি। তাঁর কথায়, “আমার লোকের মাধ্যমেই ওরা প্রস্তাব দেয়। দেখুন, ওরা (BJP) কখনও সরাসরি যোগাযোগ করে না। তারা একজন থেকে আরেকজনের কাছে, আরেকজনের কাছে, আরেকজনের কাছে, বন্ধুর কাছে যায় এবং তারপর বার্তাটি আপনার কাছে পৌঁছয়।” কেজরির দাবি, গুজরাটে বিধানসভা এবং দিল্লির পুরসভা, দু’টি ভোটেই হারবে বলে শঙ্কায় বিজেপি। তাই তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে।
[আরও পড়ুন: দুরন্ত এক্সপ্রেসের কামরায় এসি চলেনি, যাত্রীকে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের দিতে হবে রেলকে]
পাশাপাশি, ‘ওটিপি ফর্মুলা’ নয়, গুজরাতে ক্ষমতায় হলে সমস্ত জাত ও সম্প্রদায়ের জন্যই কাজ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেন কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গুজরাটে সব শ্রেণির মানুষের ভোটে ক্ষমতায় আসবে আপ। আর ক্ষমতায় এসে সবার জন্যই কাজ করা হবে। কোনও শর্টকাট ‘ওটিপি ফর্মুলায় যাওয়া হবে না। গুজরাতে ২৭ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি (BJP) এবং একে গেরুয়া শিবিরের প্রসূতিঘর হিসাবেও দেখা হয়। সেই গুজরাটে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে চান কেজরি। ‘ওটিপি’ বলতে তিনি কী বোঝাতে চান, প্রশ্নের জবাবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওবিসি, ট্রাইবাল এবং পাটিদার। অর্থাৎ, রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপি এতদিন যে জাত-পাতের রাজনীতি করেছে, রাজ্যে ক্ষমতায় এসে তাঁরা তার অবসান ঘটাবেন।
[আরও পড়ুন: দেশের চার রাজ্যের উপনির্বাচনে সাফল্য বিজেপির, মহারাষ্ট্র বাজিমাত উদ্ধবের]
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, গুজরাটে কেজরিওয়ালের উপস্থিতি মোটেই পছন্দ করছে না বিজেপি। সে কারণেই তারা বারবার বলছে যে, একদিকে দিল্লির দূষণে মানুষ যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন সে দিকে নজর না দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী গুজরাটে ভোটপ্রচারে ব্যস্ত। তাছাড়া, অনেকেরই ধারণা, কেজরিওয়ালকে দিল্লিতে আটকে রাখতেই এই সময় দিল্লি পুরসভার (MCD) ভোট ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে।