সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বাবরি তো ঝাকি হ্যায়, মথুরা কাশী বাকি হ্যায়।’ নয়ের দশকে করসেবকদের এই হুঙ্কার ভোলার নয়। সেই স্লোগানের সুরেই আজ মথুরায় (Mathura) প্রথম পদক্ষেপ নিচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়। আজ ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের (Babri Masjid demolition) বর্ষপূর্তির দিনেই শাহি ঈদগাহ মসজিদ সংলগ্ন চত্বরে শ্রীকৃষ্ণের একটি মূর্তি স্থাপন করা হচ্ছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার আশঙ্কায় মন্দির ও মসজিদ চত্বর কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলেছে মন্দিরনগরীর প্রশাসন।
ইতিমধ্যে অযোধ্যার (Ayodhya) বিতর্কিত ধর্মীয় স্থানে রামমন্দির নির্মাণের রায় শুনিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অযোধ্যাতেই অন্যত্র মসজিদ নির্মাণের জন্য পাঁচ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়কে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সময়েই ‘অল ইন্ডিয়া আখড়া পরিষদ’ জানিয়েছিল, রাম মন্দিরের নির্মাণ শেষ হলে মথুরা ও কাশীর মন্দিরগুলিকে ‘মুক্ত’ করা হবে। সেই মতোই ৬ ডিসেম্বরে শাহি ঈদগাহ মসজিদ সংলগ্ন চত্বরে শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি স্থাপনের ভাবনা।
[আরও পড়ুন: ‘নাগাল্যান্ড যাওয়ার পরিস্থিতি নেই’, বাতিল তৃণমূল প্রতিনিধিদের সফর]
এদিকে মসজিদ চত্বরে শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি স্থাপন নিয়ে হুমকি দিয়েছে বেশকিছু চরমপন্থী সংগঠন। ফলে গোটা বিষয়ে উদ্বিগ্ন মথুরা প্রশাসন। জানা গিয়েছে, কাটরা কেশব দেব চত্বরে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে। এখানেই শ্রীকৃষ্ণের মন্দির ও শাহি ঈদগাহ মসজিদ নিয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক বিরোধ। যদিও গত কয়েক দশকে মথুরায় তেমন অশান্তির ঘটনা ঘটেনি, তথাপি মসজিদ চত্বরেই হিন্দু আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন। শহরের আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে প্রত্যেক প্রধান রাস্তায় পুলিশি ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। বিতর্কিত মন্দির ও মসজিদের খুব কাছ দিয়ে যাওয়া ন্যারোগেজ ট্রেন লাইনটিকে আজকের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মন্দির ও মসজিদে উভয় স্থানে প্রবেশের ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়াও সিসিটিভিতে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা চত্বর।
[আরও পড়ুন: সংসদে বিরোধীদের সাঁড়াশি চাপ, নাগাল্যান্ড ইস্যুতে দুই কক্ষে বিবৃতি দেবেন অমিত শাহ]
প্রসঙ্গত, আধ্যাত্মিক শহর মথুরায় রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন মন্দির। হিন্দুদের বিশ্বাস মতে যেখানে শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান, সেই চত্বরেই রয়েছে শাহি ঈদগাহ মসজিদ। ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, প্রাচীন কেশবনাথ মন্দির ভেঙেই মসজিদটি তৈরি করেন ঔরঙ্গজেব। ১৯৩৫ সালে ওই মন্দির চত্বরের মালিকানা মথুরার রাজার হাতে সঁপে দেয় এলাহাবাদ হাই কোর্ট। পর্যায়ক্রমে সেই সত্ব বর্তায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ঘনিষ্ঠ শ্রী কৃষ্ণভূমি ট্রাস্টের হাতে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে তৈরি হয় সংঘাত। অবশেষে ১৯৬৮ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে জমির মালিকানা হিন্দুদের হাতে থাকলেও মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণ করার অধিকার পায় মুসলিম পক্ষ।