সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজের সংস্থার তথা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার সুখ্যাতি করতে গিয়ে আধুনিক এবং অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে কুৎসা করেছেন যোগগুরু বাবা রামদেব (Baba Ramdev)! যা নিয়ে গোটা দেশ ইতিমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। আর এবার এই বিতর্কের মাঝেই রামদেবকে কড়া চিঠি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ডঃ হর্ষবর্ধনের। তাঁর বক্তব্যে দেশের কোটি কোটি মানুষ আঘাত পেয়েছেন। এই ধরনের বক্তব্য দেশের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য অপমানজনক। এরপরই দু’পাতার ওই চিঠিতে যোগগুরুকে তাঁর এই মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিতেও বলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সংবাদসংস্থা এএনআই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ওই চিঠিটি টুইটও করে। তাতে হর্ষবর্ধন লিখেছেন, “অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসাকে অসম্মান করে আপনি যে বক্তব্য রেখেছেন তা দেশের মানুষকে ব্যথিত করেছে। আপনাকে ফোনেও সেকথা জানিয়েছি। আপনার বক্তব্য দেশের হাজার হাজার চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য অপমানজনক। এঁরা প্রত্যেকেই দেশের মানুষদের কাছে ভগবানস্বরূপ। এঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের জীবন বিপন্ন করে দেশের মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য দিনরাত এক করে দিয়েছেন। তাই আপনি শুধু করোনা যোদ্ধাদের অসম্মান করেননি, দেশের মানুষের ভাবাবেগেও আঘাত করেছেন। গতকাল আপনি নিজের বক্তব্যের জন্য যে যুক্তি দিয়েছিলেন, তা যথেষ্ট নয়। আশা করি আপনি বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করবেন এবং নিজের এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেবেন।”
[আরও পড়ুন: করোনায় মৃত মায়ের স্মৃতিতে অটোতেই অক্সিজেন পরিষেবা চালু মেয়ের, কুর্নিশ দেশবাসীর]
ঠিক কী বলেছিলেন রামদেব? সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এক ভিডিওতে যোগগুরুকে বলতে শোনা গিয়েছিল,”অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা আসলে বোকামি। চিকিৎসার নামে তামাশা চলে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়ে।” যোগগুরুর দাবি, করোনার বিরুদ্ধে একের পর এক অ্যালোপ্যাথি ওষুধ ব্যর্থ হচ্ছে কারণ, ওই চিকিৎসাপদ্ধতিতে রোগের আসল কারণ অনুসন্ধানই করা হয় না। যদিও পরে বিতর্কের জেরে এই মন্তব্য নিয়ে সাফাই দিয়েছে তাঁর সংস্থা পতঞ্জলি। রামদেবের সংস্থার দাবি, এটা একটা গোপন বৈঠক ছিল। আর স্বামীজি হোয়াটসঅ্যাপে আসা একটি মেসেজ সকলকে পড়ে শোনাচ্ছিলেন শুধু। তাঁর এই ভিডিও সম্পাদিত এবং ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে চিড়ে ভেজেনি। এরপর দেশের অন্যতম বৃহৎ চিকিৎসক সংগঠন বাবা রামদেবের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে।
চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়, রামদেব নিজের সংস্থার বিভিন্ন পণ্যের বিষয়ে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে মানুষজনকে বিভ্রান্ত করেন। করোনিল (Coronil) এবং স্বসারি ওষুধের প্রসঙ্গ টেনে আইএমএ’র বক্তব্য, কঠিন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রামদেব সবাইকে বোকা বানিয়ে অর্থ উপার্জনের পথ খুঁজছেন। চিকিৎসকদের ওই সংগঠনের সাফ কথা, হয় বাবা রামদেবের বিরুদ্ধে মহামারী আইনের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী মামলা করা হোক। আর নাহয় ওঁর কথা শুনে দেশের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বন্ধ কওরে দেওয়া হোক। এরপরই যোগগুরুকে চিঠি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর।