সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে গিয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলেই এবার আইনে পরিণত হবে বিলটি। তবে তার আগেই এই বিলের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে দায়ের হল মামলা। মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে, এমনই অভিযোগে ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল মামলা।
বিল সংসদে পাশ হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন বিহারের কিষাণগঞ্জের সাংসদ মহম্মদ জাওয়েদ। তিনি আবেদনে তিনি লিখেছেন, এই বিল সাংবিধানিক অধিকার ভঙ্গ করছে। সংবিধানের ১৪, ২৪, ২৬, ২৯ এবং ৩০০এ ধারা লঙ্ঘন করছে বিলটি। যে যে ধারা উল্লেখ করা হয়েছে তা হল, সমানাধিকার, ধর্মাচারণের অধিকার, ধর্মীয় বিষয় পরিচালনার স্বাধীনতা, সংখ্যালঘু অধিকার এবং সম্পত্তির অধিকার। সাংসদ আরও অভিযোগ করেছেন, বিলে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই বিলে সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল এবং স্টেট ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের রাখার কথা বলা হয়েছে। যার বিরোধিতা করেন সাংসদ।
দু’দিনের দীর্ঘ বিতর্কের পর সংসদের দুই কক্ষেই পাশ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল। রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিলেই এই বিল আইনে পরিণত হবে। বিজেপির দাবি, এই বিল আইনে পরিণত হলে কোটি কোটি প্রান্তিক মুসলিম সমাজ উপকৃত হবেন। এতদিন ধরে গুটিকয়েক প্রভাবশালীর হাতে কুক্ষিগত ওয়াকফ সম্পত্তি মুক্ত হবে এবং সাধারণ মুসলিমরা উপকৃত হবেন। যদিও বিরোধীদের দাবি, এই বিল পুরোপুরি অসাংবিধানিক। এটা আসলে পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ।
যদিও পালটা সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। স্ট্যালিন বলছেন, গুটিকয়েক জোটসঙ্গীর সমর্থনকে হাতিয়ার করে সংবিধানের উপর আঘাত হানছে বিজেপি। এটা সংখ্যাগরিষ্ঠতার অপব্যবহার। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, “এই ভাবে বিলটি পাশ করিয়ে ভারতের সংবিধানের উপর আক্রমণ করা হয়েছে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা হয়েছে।” তাঁর যুক্তি সংসদে বহু সাংসদ বিলটির বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু সেই বিরোধিতাকে কোনও গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বিল পাশ হওয়ার আগেই তামিলনাড়ু বিধানসভায় স্ট্যালিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর দল সুপ্রিম কোর্টে বিলটিকে চ্যালেঞ্জ করবে। কংগ্রেসের তরফেও দ্রুত বিলটিকে চ্যালেঞ্জ করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো এবার দায়ের হল মামলা।
বিরোধী শিবির আশাবাদী, সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ বিল চ্যালেঞ্জ হওয়ার ফলে এবার সেটি আটকে যেতে পারে। কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিংভি বলছেন, “এটা সংখ্যাধিক্যকে ব্যবহার করে চাপিয়ে দেওয়া বিল। এই বিলটি সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করলে বাতিল হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।"