সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইন্ডিয়া জোটে ফের অশান্তি। এবার খানিক অপ্রত্যাশিতভাবে অশান্তির খবর আসছে তামিলনাড়ু থেকে। সে রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরেই জোটে ডিএমকে-কংগ্রেস। এতদিন দেশের অন্য প্রান্তে ইন্ডিয়া জোটে ছোটখাট বিবাদ-অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হলেও তামিলনাড়ুতে কংগ্রেস-ডিএমকে জোট গত কয়েক বছর মসৃণভাবেই এগিয়েছে। এবার সেই মসৃণতা যেন কোথাও গিয়ে ধাক্কা খেল। দাক্ষিণাত্যের ওই রাজ্যে ক্ষমতার ভাগ চেয়ে সরব হওয়া শুরু করলেন কংগ্রেস নেতাদের একাংশ। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে প্রদেশ নেতৃত্বকে দ্বারস্থ হতে হচ্ছে হাই কম্যান্ডের।
সমস্যাটা কী? আসলে তামিলনাড়ুতে কংগ্রেস এবং ডিএমকের জোট যতই মসৃণ হোক, রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেসকে সেভাবে গুরুত্ব দেয় না ডিএমকে। লোকসভায় ৩৯ আসনের মধ্যে কংগ্রেসের জন্য ৯ আসন ছাড়া হলেও বিধানসভায় সে তুলনায় অনেক কম আসন ছাড়া হয়। এমনকী, সে রাজ্যে ডিএমকে কংগ্রেস জোট ক্ষমতায় থাকলেও সরকারে কংগ্রেসের কোনও অংশিদারিত্ব নেই। ২৩৪ আসনের তামিলনাড়ু বিধানসভায় এই মুহূর্তে ডিএমকের দখলে ১৩৩ আসন। কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ১৮। অথচ মন্ত্রিসভায় কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধিত্ব নেই।
সদ্যই তামিলনাড়ুতে নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করেছেন সুপারস্টার থলপতি বিজয়। প্রথম জনসভায় কয়েক লক্ষ মানুষকে সাক্ষী রেখে তিনি ঘোষণা করেন, ক্ষমতায় এলে জোট শরিকদের গুরুত্ব দেবেন তিনি। শরিকদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগ করে নিতে কোনও আপত্তি নেই তাঁর। বিজয়ের সেই ঘোষণার পরই হঠাৎ কংগ্রেসের একাংশ রাজ্যে ক্ষমতায় ভাগ চেয়ে সরব। একাধিক প্রভাবশালী নেতা দাবি তুলছেন, রাজ্যে অন্তত একজন মন্ত্রী কংগ্রেসি হওয়া উচিত। কারণ, এভাবে দিনের পর দিন ক্ষমতার বাইরে থেকে সরকারকে সমর্থন করে গেলে দলের কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়বেন। শুধু লোকসভা নির্বাচনের জনপ্রতিনিধি থাকবে, স্থানীয় নির্বাচনে থাকবে না, সেটা হতে পারে না।
কংগ্রেসের অন্দরে এই গুঞ্জন নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অসন্তুষ্ট ডিএমকে। কারণ স্ট্যালিনের দল শুরু থেকেই নিজেদের অবস্থানে অনড়। লোকসভায় কংগ্রেসের জন্য জায়গা ছাড়তে তারা রাজি। কিন্তু বিধানসভায় নয়। শেষে বাধ্য হয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সেলপেরুনথাগাই সাফ বলে দিচ্ছেন, রাজ্যে ডিএমকের কাছে ক্ষমতার ভাগ চাওয়া হবে কিনা, সেটা প্রদেশ নেতৃত্ব স্থির করতে পারে না। এটা ঠিক করতে পারে একমাত্র হাইকম্যান্ড। তাঁর কথায়, "অতীতে যখন ডিএমকে আমাদের উপর নির্ভরশীল ছিল, তখনও আমরা নিঃস্বার্থে ওদের সমর্থন করেছি। ইন্ডিয়া জোটের স্বার্থ সবার আগে দেখতে হবে।"