shono
Advertisement

চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একঘরে করে রাখা যাবে না, সব রাজ্যকে বার্তা পাঠাল কেন্দ্র

রোগী নয়, রোগের বিরুদ্ধে লড়েই বিপদ মোকাবিলায় জোর দিয়েছে মন্ত্রক। The post চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একঘরে করে রাখা যাবে না, সব রাজ্যকে বার্তা পাঠাল কেন্দ্র appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:19 PM Apr 08, 2020Updated: 09:19 PM Apr 08, 2020

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: সামাজিক দূরত্ব মানে মানসিক দূরত্ব নয়। তাই করোনা আক্রান্ত বা করোনা চিকিৎসায় যুক্ত চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের কোনওভাবেই সমাজে একঘরে করে রাখা যাবে না। বরং কোথাও তেমন হচ্ছে বুঝলে প্রশাসনকে সঙ্গে সঙ্গে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে বলে সমস্ত রাজ্যকে বার্তা পাঠাল কেন্দ্র।

Advertisement

অনেক ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠে পাড়াপড়শির কাছে হেনস্তা হচ্ছেন। অনেককে সামাজিক বয়কট করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, করোনা চিকিৎসায় যুক্ত ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও হামেশা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন বলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিযোগ জমা পড়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে। যা শুনে দিল্লির কর্তারা যারপরনাই উদ্বিগ্ন। এই অশুভ প্রবণতায় দাঁড়ি টানার লক্ষ্যেই সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে অ্যাডভাইসরি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এমতাবস্থায় প্রশাসনের কী করণীয়, সে ব্যাপারে তাতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

[আরও পড়ুন: ‘হনুমানজিকে স্মরণেই দূর হবে করোনা ভাইরাস’, রাহুল সিনহার মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক]

বিশেষজ্ঞদের অভিমত, যথাযথ চিকিৎসাবিধি মেনে চললে করোনা ভাইরাসের কবলে পড়া মানুষেরও সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ষোলো আনা। কিন্তু ঘটনা হল, কেউ করোনা আক্রান্ত হলে সংশ্লিষ্ট পুরো এলাকাকে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া মারফত সংবাদ চাউর হতে দেরি লাগছে না। বাইরের লোকের কাছে গোটা ওই এলাকার বসবাসকারীরা কার্যত ‘অচ্ছুত’ হয়ে পড়ছেন। এমনকী, যে সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীর চিকিৎসা করছেন, অনেকক্ষেত্রে উত্তেজিত জনতা তাঁদেরও রেয়াত করছে না।

পাশাপাশি সুস্থ হওয়ার পরেও সেই ব্যক্তিকে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সামাজিকভাবে কোণঠাসা করে রাখা রাখা হচ্ছে তাঁর গোটা পরিবারকে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অভিমত, কোভিড-১৯ ঘিরে এভাবে অহেতুক একটা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে। পরিণামে বেপথু হয়ে পড়ছে তামাম সামাজিক বিন্যাস। জন্ম দিচ্ছে অপরাধপ্রবণতার। এই জাতীয় অবাঞ্ছিত ঘটনা রুখতে কেন্দ্র সব রাজ্যকে তৎপর হতে বলেছে। বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “কেউ ইচ্ছা করে করোনায় আক্রান্ত হয় না। তাই এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” “সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন বিষয়কে চাউর করাও অত্যন্ত কুরুচিকর।” আক্ষেপ ডা. গঙ্গোপাধ্যায়ের। যদিও রাজ্যের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) জ্ঞানবন্ত সিংয়ের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এখনও এমন কোনও ঘটনার খবর নেই। তাঁর কথায়, “এমন অভিযোগ পেলে পুলিশ দ্রুত কড়া ব্যবস্থা নেবে।”

[আরও পড়ুন: মানবিকতার নজির, করোনা-যোদ্ধা স্বাস্থ্যকর্মীদের বিনা ভাড়ায় ঘর দিতে চান ছাত্রী]

স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অ্যাডভাইসরিতে চারটি বিষয়কে স্পষ্ট চিহ্নিত করে হয়েছে। বলা হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত বা কোয়ারান্টাইনে থাকা কোনও ব্যক্তির পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা যাবে না। করোনা চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে জড়িতদের ও তাঁদের পরিবারকে যাবতীয় প্রশাসনিক সহায়তা জোগাতে হবে। প্রত্যেককে যে কোনও ধরনের গুজব রটানো থেকে বিরত থাকতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়া কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যকে আগে যাচাই করে নিতে হবে। গুরুত্ব দিতে হবে শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যকে। কোনও এলাকা বা অঞ্চলকে ‘করোনাগ্রস্ত’ তকমা দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ খেয়াল রাখতে হবে, লড়াইয়ের অভিমুখ যেন কোনওভাবেই করোনা আক্রান্তের দিকে ঘুরে না যায়। রোগী নয়, রোগের বিরুদ্ধে লড়েই বিপদ মোকাবিলায় জোর দিয়েছে মন্ত্রক।

The post চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একঘরে করে রাখা যাবে না, সব রাজ্যকে বার্তা পাঠাল কেন্দ্র appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement