সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রের থেকে বেশি অর্থ পেতে চাইলে রাজ্যকে পিছিয়ে পড়া রাজ্য বলে ঘোষণা করুক কেরল সরকার। বাজেট বঞ্চনা নিয়ে চরম ডামাডোলের মাঝেই এমন মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জর্জ কুরিয়ান। তাঁর এহেন বক্তব্যে রীতিমতো বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কেরলের শাসকদল বামফ্রন্টের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে যায় কেন্দ্রীয় সরকারের কেরল বিরোধী মানসিকতা।

শনিবার সংসদে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তবে সেই বাজেটে দেখা যায়, বিহারের জন্য ঝুলি উপুড় করে দিয়েছে মোদি সরকার। অথচ অবিজেপি রাজ্যগুলির ভাঁড়ার কার্যত খালি। এই ঘটনায় সরব হন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁদের তরফে ওয়েনাড়ের পুনর্নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছিল। ৪০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এখানে। আমরা অনুরোধ করেছিলাম ২৪ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ কেরলকে দেওয়া হোক তবে কেন্দ্র বিষয়টিকে গুরুত্বই দেয়নি। শিক্ষা-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে আমাদের রাজ্যকে কোনও সুযোগ দেয় না কেন্দ্র। ওদের দাবি, এইসব দিকে আমরা এগিয়ে আছি। তবে কিছু ক্ষেত্রে আমাদেরও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সেখানেও আমাদের সঙ্গে বঞ্চনা করা হচ্ছে।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগের পালটা এদিন মুখ খোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কুরিয়ন। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার সেই রাজ্যগুলিকে বিশেষ প্যাকেজ দেয় যারা উন্নয়নের সূচকে পিছিয়ে পড়া রাজ্যের তালিকায় পড়ে। এরপরই কেরলের বাম সরকারকে তোপ দেগে তিনি বলেন, আপনি ঘোষণা করুন কেরল পিছিয়ে পড়া রাজ্য। এখানে রাস্তা নেই, ভালো শিক্ষা নেই। যদি আপনি বলেন, বাকি রাজ্যের তুলনায় কেরলে শিক্ষা ব্যবস্থা, সামাজিক উন্নয়নের মতো বিষয়গুলিতে পিছিয়ে রয়েছে, তাহলে কেন্দ্র বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবে এবং সেইমতো রিপোর্ট জমা হবে। সরকার বিচার করে সিদ্ধান্ত নেবে। আপনার মতো করে তো সরকার চলবে না।'
উল্লেখ্য, জর্জ কুরিয়ন নিজে কেরলের কোট্টায়ম জেলার বাসিন্দা। নরেন্দ্র মোদি সরকারের মৎস পালন, পশুপালন, ডেয়ারি ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী। গত বছরই রাজ্যসভার সাংসদ হন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এহেন বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বাম। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক এমবি গোবিন্দন বলেন, 'কেন্দ্র চায় কেরল পিছিয়ে পড়ুক, কিন্তু তা হবে না। বিজেপি আসলে কেরল বিরোধী। রাজ্যের নেতার এহেন মন্তব্যই বিজেপির মানসিকতা স্পষ্ট করে দেয়।'