সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুজরাটের (Gujarat) ভয়াবহ দুর্ঘটনায় সেতু (Morbi Bridge Collapse) ভেঙে মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের। জীবনে কোনওদিন এত যন্ত্রণা পাননি বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ঘটনার দু’ দিন পরে মঙ্গলবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে গেলেন তিনি। সেই সঙ্গে সরকারি হাসপাতালে দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গেও দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী। পরে এই নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করেন তিনি। সেখানেই এই ঘটনার বিস্তারিত তদন্তের প্রয়োজন বলে জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা গিয়েছে, বৈঠকে মোদি বলেন, ”মোরবি সেতু দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত দিক চিহ্নিত করা এখন সময়ের দাবি। এবিষয়ে বিস্তৃত তদন্তের প্রয়োজন।” সেই সঙ্গে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপও করার কথা বলেন তিনি। বৈঠকে মোদি ছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি।
এদিন দুর্ঘটনাস্থলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের সঙ্গে গিয়েছিলেন মোদি। তারপর সেখান থেকে হাসপাতালে যান তিনি। সেখানে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু মোদির সফরের আগেই ব্রিটিশ আমলের সেতুর সংস্কারের দায়িত্ব যে সংস্থার উপরে তাদের নামটি ঢেকে দেওয়া হয় সাদা প্লাস্টিক দিয়ে। ওরেভা গ্রুপ নামের ওই সংস্থার নাম আড়াল করতেই কি এমন করা হয়? এই প্রশ্ন তুলে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিরোধীরা একে মোদির সফরের আগে ‘ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট’ বলে তোপ দেগেছে। এদিকে মোদির সফরের আগের রাতেই গুজরাটের সরকারি হাসপাতালে কার্যত ‘সাজ সাজ’ রব পড়ে যায়। রাত জেগে হাসপাতাল সাজিয়ে তোলা হয়। এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনার ঝড় তুলেছেন বিরোধীরা। অভিযোগ, নিখোঁজ আত্মীয়কে খুঁজতে আসা ব্যক্তিদেরও এই কারণে অপেক্ষা করতে হয়েছে।
[আরও পড়ুন: কর্ণাটক পুর নিগম নির্বাচনে বড় সাফল্য, বিজয়াপুরায় ৩৫টির মধ্যে ১৭টি আসনে জয়ী বিজেপি]
কংগ্রেসের তরফে টুইট করে বলা হয়েছে, “মঙ্গলবার মোরবির সরকারি হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগেই হাসপাতালে মেরামতির কাজ চলছে। নতুন করে রং করা হচ্ছে, টাইলস বসানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এসে ছবি তুলবেন, সেই কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেষ্টার কোনও কমতি রাখছেন না। তাদের একটুও লজ্জা হচ্ছে না। এত মানুষ মারা গিয়েছেন, তার মধ্যেও উৎসবের তোড়জোড় করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।”
গুজরাটের নির্বাচনের আগে প্রচার পুরোদস্তুর শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস ও আপের মতো দলগুলি ক্ষমতাসীন বিজেপিকে বেকায়দায় ফেলতে প্রশ্ন তুলেছে, কোনও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সবুজ সংকেত না পেয়েই কেন ওই সেতুটি নতুন করে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল পূর্ব নির্ধারিত সময়ের আগেই। সব মিলিয়ে এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের মুখে পড়তে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে।