সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংসদে কার্যত বিনা বিরোধিতায় পাশ হয়েছে মহিলা সংরক্ষণ বিল (Women’s Reservation Bill)। মোদি সরকারের আনা আইনের পাশে সর্বান্তকরণেই রয়েছে বিরোধীরা। এই প্রথম নয়, এর আগেও এই মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাস রয়েছে। অথচ এই গোটা প্রক্রিয়ার সব কৃতিত্ব যেন শুধুই নরেন্দ্র মোদির! অন্য কেউ নন, এই দাবি কার্যত নিজের মুখেই করলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন বিল পাশের আনন্দে উৎসবে মেতে ওঠে গোটা বিজেপি (BJP) শিবির। আর সেই উৎসবের মধ্যমণি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অনুষ্ঠানে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন তিনি। মনে করিয়ে দেন এটা একটা দৃঢ় পদক্ষেপ। মহিলাদের উন্নয়নের যে নতুন যুগের সূচনার গ্যারান্টি মোদি দিয়েছিলেন এটা তারই প্রত্যক্ষ প্রমাণ।
এদিন অনেক কথাই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী (PM Modi)। দেশের সব মহিলাকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি ধন্যবাদ দেন দেশের কোটি কোটি মানুষকে, যাঁরা তাঁদের এই আইন আনার সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ বক্তৃতার মধ্যে ‘মোদি গ্যারান্টি’র উল্লেখ করে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তিনি মিশিয়ে দিলেন ‘ব্র্যান্ড মোদি’ও। যদিও প্রধানমন্ত্রী যখন জানতে চান, ”আজ যেটা সম্ভব হল, তা কী করে হল?” তাঁর প্রশ্নের উত্তরে চারপাশ থেকে মহিলারা ‘মোদি মোদি’ ধ্বনি তুলতে থাকেন। যা শুনে সলজ্জ হেসে মোদি বলেন, ”এটা মোদি নয় আপনারা করেছেন। কোটি কোটি দেশবাসী করেছেন। কিন্তু কী করে করলেন? এর সবচেয়ে বড় কারণ, কেননা দেশের জনতা, বিশেষ করে আমার মা-বোনেরা ভোট দিয়ে একটি সুস্থির সরকার বানিয়েছিলেন। আর তারই শক্তিতে এই সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারছে।” অর্থাৎ, এক্ষেত্রেও দেশের আমজনতাকে ধন্যবাদ জানানোর সময় আগামী লোকসভা নির্বাচনেও তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়ার আর্জিও যেন পরোক্ষে জানিয়ে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
[আরও পড়ুন: আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা চলবে, জানিয়ে দিলেন অভিষেক]
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই লোকসভা নির্বাচনের কাউন্ট ডাউন কার্যত শুরু হয়ে গিয়েছে। বিরোধী ইন্ডিয়া জোট লাগাতার আক্রমণ করেছে মোদি সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি যে ‘ব্র্যান্ড মোদি’কেই আরও উজ্জ্বল করে তুলতে প্রচার চালাবে তা পরিষ্কার। এদিন মোদির কথাতে সেই বিষয়টিই স্পষ্ট হল। প্রসঙ্গত, এর আগে চন্দ্রযান ৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার সময়ও মোদিকে টিভির পর্দায় ভারতের পতাকা নাড়াতে দেখা গিয়েছিল। যা দেখে বিরোধীরা কটাক্ষ করেছিল, চন্দ্রযানের সাফল্য ইসরোর বিজ্ঞানীদের না দিয়ে নিজেই নিতে চাইছেন মোদি।
তবে সমালোচনা যতই হোক, এই কৌশল বজায় থাকবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। কেননা বিরোধীদের সমালোচনাতেও মোদির ভাবমূর্তি যে সেভাবে টলেনি তা পরিষ্কার হয়েছে সাম্প্রতিক সমীক্ষাগুলিতেও। তাই মোদির মুখকেই যে প্রচারের হাতিয়ার করতে চাইবে গেরুয়া শিবির, তা পরিষ্কার। পাশাপাশি এও পরিষ্কার, মোদি নিজেও বারবার ‘মোদি গ্যারান্টি’র উল্লেখ করবেন। বুঝিয়ে দিতে চাইবেন, দেশকে নেতৃত্ব দিতে তিনি এখনও প্রতিদ্বন্দ্বীই। মহিলা সংরক্ষণ বিলের সাফল্য উদযাপনেও সেই কৌশল বজায় রাখলেন মোদি।