হেমন্ত মৈথিল: মৌনি অমাবস্যার ভয়াবহতা কাটিয়ে নতুন করে সেজে উঠতে শুরু করেছে মহাকুম্ভ। আসন্ন বসন্ত পঞ্চমীর অমৃতস্নানে যাতে নিরাপত্তার কোনও ত্রুটি না থাকে তার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে যোগী সরকার। গত বৃহস্পতিবার প্রয়াগরাজে গিয়ে গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব মনোজ কুমার সিং ও ডিজিপি প্রশান্ত কুমার। সেখানেই মুখ্যসচিব জানান, যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আগামী অমৃতস্নানে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করা হবে।

মুখ্যসচিব বলেন, "গত দেড় বছর ধরে মহাকুম্ভের প্রস্তুতিপর্ব চলেছে। গোটা বিশ্ব এর তারিফ করেছে। এরপরও যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সমস্ত রকম প্রস্তুতি ছিল আমাদের। তবে অতিরিক্ত ভিড়ের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে এমনটা যাতে আর না ঘটে সেদিকেই নজর থাকবে আমাদের।" পাশাপাশি ডিজিপি প্রশান্ত কুমার বলেন, যা ঘটেছে তা ভয়াবহ। তবে আমাদের নজর এখন বসন্ত পঞ্চমীর অমৃতস্নান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা। যদি তাঁর জন্য বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে হয় তবে সেটাও নেওয়া হবে। যেখানে সবচেয়ে বেশি ভিড় সেখানে বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হবে। ব্যারিকেড সংলগ্ন অঞ্চলের নিরাপত্তায় এসপি পদমর্যাদার আধিকারিকদের রাখা হবে।
দুর্ঘটনা আটকাতে মুখ্যসচিব বলেন, অমৃতস্নানের মূল ক্ষেত্র যাকে 'নোজ' বলা হয় সেই অংশে সর্বাধিক ভিড়। ওই অঞ্চল থেকে ভিড়ের সংখ্যা কমাতে হবে আমাদের। ভিড়ের চাপ কমাতে ছোট ছোট ভাগে ব্যারিকেড গড়া হবে। এবং পুণ্যর্থীদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে স্নানের স্থানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বসে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে আলোচনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৪৪ বছর পর বিরল ত্রিবেণী যোগ পড়েছে মহাকুম্ভে। গত বুধবার রাতে মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে ছিল দ্বিতীয় পুণ্যস্নান। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত ২টো নাগাদ সঙ্গমে স্নানের উদ্দেশে জড়ো হন পুণ্যার্থীরা। ১০ হাজারের বেশি মানুষ একসঙ্গে স্নান করতে ভিড় জমান। তখনই ১১ থেকে ১৭ নম্বর খুঁটির মাঝে ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে যায়। যার জেরে পদপিষ্ট হয়ে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে যোগী সরকার। এছাড়া আহত হন আরও বহু মানুষ।
বৃহস্পতিবার প্রয়াগরাজ সফরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে যান মুখ্যসচিব ও ডিজিপি। আহতদের শারীরিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, যারা আহত হয়েছেন তাঁদের কেউই গুরুতর অবস্থায় নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে পুণ্যার্থীদের চিকিৎসার কোনও ত্রুটি না থাকে। পাশাপাশি মুখ্যসচিব, ডিজিপি-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা মহাকুম্ভের দুর্ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন।