ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কংগ্রেসের তিনদিনের প্লেনারি (Plenary Session) শুরু হল ছত্তিশগড়ের রায়পুরে। ১৫-২০ হাজার কর্মীর বসার জন্য হ্যাঙ্গারের ব্যবস্থাটুকু করা ছিল। ৮০০ কিলোমিটার দূর থেকে ৮০ জন বাঙালিকে নিয়ে সেই প্লেনারির জন্য প্যাভিলিয়ন, মঞ্চের বৃহৎ অংশ, লাউঞ্জ, ৭০ ফুট উচ্চতার পেল্লাই এলইডি স্ক্রিন, গেটের মতো নানা জরুরি কাঠামো বানিয়ে দিয়ে এলেন কলকাতার (Kolkata) ভবানীপুরের ‘দাদা’ ওরফে প্রকাশ দাস। তাও মাত্র ৭ দিনে।
গোটা মঞ্চে ষড়ভুজ আকৃতির নানা কাঠামো ব্যবহার হয়েছে। 3D প্রিন্টের মাধ্যমে ছোট ছোট চেহারার নানা অংশ বানিয়ে পরিকল্পনা সাজিয়ে, তার আসল রূপদান করা হয়েছে। সঙ্গে কাস্টমাইজড ওয়ালপেপার। গোটাটা ‘অন স্পট’ পরিকল্পনা করে সেখানেই চেহারা তৈরি হল যাঁর হাত ধরে, তিনি ভবানীপুরের (Bhawanipur) ‘দাদা’ প্রকাশ দাস। বিগত ৪০ বছর ধরে কলকাতার বড় বড় দুর্গাপুজোর (Durga Puja) কাজ করে চলেছেন প্রকাশবাবু। এখন স্থায়ী বাসিন্দা অবশ্য হরিদেবপুরের। ভবানীপুর তাঁর পুরনো ডেরা। দ্রুত সূক্ষ্ম কাজ করতে পারেন বলেই তাঁর ডাক সর্বত্র। আর এটাই তাঁর ইউএসপি (USP)। শেষ কাজ বইমেলার (Kolkata Book Fair 2023) স্পেনের প্যাভিলিয়ন। সে সম্পর্কে বলতে জানালেন, “দ্রুত ক্রিয়েটিভ কাজ দেখানোর যুগ এখন। ৪০ বছর ধরে কাজ করেও যুগের চাহিদার সঙ্গে দৌড়তে হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: ‘জমির মীমাংসা হয়ে গিয়েছে’, শান্তিনিকেতন থেকে লন্ডনে পাড়ির আগে দাবি অমর্ত্যর]
এমন দ্রুত ক্রিয়েটিভ কর্মীর চাহিদার জেরেই দুনিয়াজুড়ে ছুটে বেড়াতে হয় ভবানীপুরের ‘দাদা’কে। প্রয়াত মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, সুব্রত মুখোপাধ্যায়দের কথামতো নানা সভা-সমিতির কাজ করেছেন একসময়। সে সময় ব্যানার-প্রিন্টিংয়ের কাজ আসত বেশি। আবার কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পুজোর পাশাপাশি কংগ্রেস (Congress) সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, মায়া ঘোষদের নানা কাজও করছেন। সেই সূত্রেই নানা মহলে পরিচিত মুখ। আর সবসময় সঙ্গী তাঁর স্ত্রী। যদিও তাঁর আক্ষেপ, “কলকাতায় সর্বত্র কাজের কদর আর আগের মতো নেই। যেখানে দাম পাই কাজ করি। তবে ঘুরে ঘুরে কাজের নেশাও টানে।”
[আরও পড়ুন: হরমনপ্রীতের রান আউট ফেরাল ধোনির স্মৃতি, দুই ক্ষেত্রেই হৃদয় ভাঙার কাহিনি]
রায়পুরের প্যাভিলিয়নের কাজ কেমন চলছে, তা দেখতে গিয়েছিলেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল (Bhupesh Baghel)। কাজের প্রশংসা করে প্রকাশের সঙ্গে মিনিট পনেরো খোশগল্পও করে গিয়েছেন বাঘেল। কিছুদিন আগেই বিহারের বক্সারে রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বে সাধুদের যজ্ঞভূমি তৈরির কাজ করেছেন। সেখানে ১০০টি সমস্ত আধুনিক সুবিধাযুক্ত স্নানাগার আর ৬টা লাউঞ্জ বানিয়েছেন মাত্র ৫ দিনে। সেও কলকাতা থেকে জনা ৪০ লোক নিয়ে গিয়ে কাজ করেছেন প্রকাশ। বলছেন, “পুরোটাই মাথার খেলা। সেই সঙ্গে দ্রুত হাতের কাজ।” একটি আইপিএল-এর মঞ্চেও একবার তাঁর হাতের জাদু দেখিয়েছেন প্রকাশ। বলা হয়েছিল, পাঁচ মিনিটের মধ্যে মঞ্চ বদলানোর একটা কাজ করে দিতে হবে। তার জন্য একবারই মঞ্চে উঠে একটাই কাজ করে নেমে আসবে, এমন শর্তে ১২০ জনকে কাজে লাগাতে হয়েছিল।