সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের দামামা বাজছে। সে সময় মোদিকে ‘চাওয়ালা’ বলে বিদ্রুপ করেছিলেন তিনিই। যা পরে শাপে বর হয় বিজেপির। দলের তরফে প্রচার করা হয়, যদি একজন চাওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হয়, তাতে আপত্তি কীসের? দেশবাসী একবাক্যে তাতে সম্মতি জানিয়েছিল। এবার গুজরাট নির্বাচনের আগে বিজেপির হাতে তুরুপের তাস তুলে দিলেন সেই মণিশঙ্কর আইয়ারই। এই কংগ্রেসির এমন মন্তব্যর প্রেক্ষিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় নেতৃত্ব। মণিশঙ্করকে কংগ্রেসের সদস্যপদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়। তাঁকে শোকজ করা হয়েছে।
[ কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে জিএসটি-র প্রকৃতি কীরকম ছিল? প্রশ্নে বিভ্রান্ত পড়ুয়ারা ]
কী বললেন তিনি? গুজরাটে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ইঙ্গিতে জহওরলাল নেহরুকেই খানিকটা খাটো করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বি আর আম্বেদকরের গৌরব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীকে নাম না করেই সমালোচনা করেন তিনি। জবাব দিতে গিয়ে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বলেন, “আমার মনে এই মানুষটি খুব ছোটলোক। সভ্যতা-ভব্যতা বলে ওঁর কিছু নেই। এই সময়ে এরকম নোংরা রাজনীতি করার কী দরকার?” তাঁর মন্তব্য সামনে আসার পরই বিতর্কের ঝড় ওঠে। প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এরকম কথা কী করে একজন বর্ষীয়ান নেতা বলতে পারেন, সে প্রশ্ন করেন রাজনৈতিক মহলের অনেকেই।
[ মোদির রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি উদ্ধার ২ হাজার টাকার জাল নোট ]
ইতিহাস থেকে প্রবীণ নেতা যে শিক্ষা নেননি তা তাঁর মন্তব্যেই স্পষ্ট। এই ধরনের মন্তব্য ভোটের বাজারে কংগ্রেসকেই ব্যাকফুটে ঠেলে দেবে। দেওয়াল লিখন পড়তে পেরে সঙ্গে সঙ্গে দূরত্ব বাড়িছে কংগ্রেস। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দল এ ধরনের মন্তব্যকে সমর্থন করে না। আইয়ার যা বলছেন, তা তাঁর নিজস্ব মতামত।রাহুল গান্ধীও তড়িঘড়ি জবাব দিয়েছেন। এ ধরনের মন্তব্যের জন্য বর্ষীয়ান নেতাকে মোদির কাছে ক্ষমা চাইতেও বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, যে সুরে ও ভঙ্গিতে এ কথা বলা হয়েছে, তা কখনওই সমর্থনযোগ্য নয়।
[ মেয়ের বিয়ে নিমন্ত্রণপত্রে আধার কার্ডের আদল! রাতারাতি সেলিব্রিটি এই ব্যক্তি ]
যদিও ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করলেও এ দাগ সহজে মোছার নয়। হাতে তুরুপের তাস পেয়ে তার ব্যবহারে বিন্দুমাত্র দেরি করেনি বিজেপি। প্রতিক্রিয়া এসেছে খোদ নরেন্দ্র মোদির থেকেই। সুরাটে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রীও ছিলাম। প্রধানমন্ত্রীও হয়েছি। তাতে কি কখনও কারও মাথা হেঁট হয়েছে? না আমি কাউকে লজ্জায় ফেলে দেওয়ার মতো কাজ কোনওদিন করেছি? তাহলে কেন আমাকে ‘নিচ’ বলা হচ্ছে?” তাঁর দাবি, এই ধরনের মন্তব্য আসলে কংগ্রেসের পরিবারতান্ত্রিক মানসিকতারই প্রতিফলন।
একই অভিযোগ রবিশঙ্কর প্রসাদেরও। তিনি জানাচ্ছেন, “মণিশঙ্করের মানসিকতা নবাবের মতো। তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিচ বলছেন। কিন্তু আমরা সকলেই আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জন্য গর্বিত।”
ওদিকে মণিশঙ্করের পালটা সাফাই, প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের নেতাদের নামে বাজে কথা বলছেন। কটূ মন্তব্য করছেন। তাতে কিছু হয় না? তাঁর দাবি, তিনি কংগ্রেসে কোনও পদে নেই। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর নোংরা কথার জবাব দিতেই পারেন।
ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে কপিল সিব্বলের অবস্থানের জন্য বিপাকে পড়েছে কংগ্রেস। হিন্দুত্বের পথ ধরে মোদিকে টেক্কা দিতে গিয়েও বেশ বেকায়দায়। এবার মণিশঙ্করের বক্তব্য ব্যুমেরাং হয়ে যাবে না তো? সিঁদুরে মেঘ দেখছে কংগ্রেসের একা্ংশেই।
[ মুসলিম ভোট টানতে কংগ্রেসের বিতর্কিত পোস্টার, নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ বিজেপি ]