সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোয়ার জনপ্রিয় নৈশক্লাবে পার্টি চলাকালীন অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের মৃত্যুতে তোলপাড় গোটা দেশ। বেআইনি নির্মাণ, সংকীর্ণ এবং অপর্যাপ্ত প্রবেশপথ... ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠছে ওই ক্লাবের বিরুদ্ধে। নৈশক্লাবের মালিক সৌরভ লুথরা ‘পলাতক’। ইতিমধ্যে জারি হয়েছে লুকআউট নোটিস। যদিও সোমবার 'অজ্ঞাতবাস' থেকে সমাজমাধ্যমে বিবৃতি দিলেন তিনি। প্রশ্ন উঠছে, এত বড় ঘটনার পর পুলিশ কী করে খুঁজে পায় না সৌরভকে? 'বেআইনি' নৈশক্লাবের মতো এক্ষেত্রেও কি 'ম্যানেজ' করছেন প্রশাসনকে?
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর প্রথম অগ্নিকাণ্ডে দুঃখপ্রকাশ করলেন নৈশক্লাবের মালিক সৌরভ লুথরা। সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর ভাবে শোকাহত এবং মর্মাহত। ক্ষতিগ্রস্তদের সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন সৌরভ। উল্লেখ্।, গতকালই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রবিবারই নৈশক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার-সহ চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল দিল্লিতে রয়েছেন উত্তর গোয়ার ‘বির্চ বাই রোমিও লেনে’ নৈশক্লাবটির মালিক সৌরভ লুথরা এবং তার ভাই। রাজধানীর উদ্দেশে পুলিশ রওনা দিয়েছে বলেও জানা গিয়েছিল। যদিও এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি!
উত্তর গোয়ার আরপোরায় বাগা সুমদ্র সৈকতের কাছে অবস্থিত জনপ্রিয় নৈশক্লাবটিতে শনিবার পার্টি চলাকালীন আগুন ধরে যায়। এখনও পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে অগ্নিদগ্ধ হয়ে। এই ঘটনার পর থেকে বিরোধী দলের তোপের মুখে পড়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সওয়ান্ত। ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। তারা এক সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেবে। পাশাপাশি মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা করে এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন সওয়ান্ত।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মাত্র দুটি প্রবেশপথ ছিল নৈশক্লাবটিতে। গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সওয়ান্তও জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত প্রবেশপথ না থাকায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। আগুন থেকে বাঁচতে পালানোর খুব বেশি রাস্তা ছিল না। তিনি আরও বলেন, ভিতরে আতশবাজি ফাটানোয় আগুন লাগে নৈশক্লাবে। যদিও গ্যাস সিলিন্ডার ব্লাস্টের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। মৃত ২৫ জনের মধ্যে ২০ জন ক্লাবের কর্মী। বাকিরা পর্যটক বলে জানা গিয়েছে।
সাসপেন্ড করা হয়েছে পঞ্চায়েত পরিচালক সিদ্ধি তুষার হরলঙ্কর, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সচিব সদস্য ডাঃ শামিলা মনতেইরো এবং গ্রামীণ পঞ্চায়েত আরপোরা-নাগোয়ার সচিব রঘুবীর বাগকরকে। এক আধিকারিক জানান, এই তিন জনই ২০২৩ সালে আরপোরায় তৈরি হওয়া ‘বির্চ বাই রোমিও লেনে’ নৈশক্লাবটিকে ছাড়পত্র দেন। পুলিশ আরপোরা-নাগোয়ার পঞ্চায়েত প্রধান রোশন রেদকরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে। রোশনই অভিশপ্ত নৈশক্লাবটির জন্য ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করেছিলেন।
