সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের কবরের নিরাপত্তার আর্জি জানিয়ে এবার রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ হলেন, নিজেকে 'মুঘল বংশধর' বলে দাবি করা ইয়াকুব হাবিবুদ্দিন। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে এই মর্মে চিঠি লিখলেন তিনি। তাঁর আর্জি, এই ঐতিহাসিক স্থাপত্যকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিক রাষ্ট্রসংঘ।

মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগর (পূর্ব ঔরঙ্গাবাদ) জেলার কুলদাবাদে অবস্থিত মুঘল সাম্রাজ্যের নবাব ঔরঙ্গজেবের কবর। এই কবরকে সরানোর দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের রাজনীতি। সম্প্রতি এই ইস্যুতে হিংসায় উত্তাল হয়েছে মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহর। এই পরিস্থিতির মাঝেই নিজেকে ওই সম্পত্তির 'তত্ত্বাবধায়ক' বলে দাবি করা ইয়াকুব বলেন, ওই সমাধি জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে আগেই। এবং ১৯৮ সালের প্রাচীন প্রাচীন স্থাপত্য ও পুরাতত্ত্ব আইন অধীনে রয়েছে। যার ফলে ওই স্মতিস্তম্ভ বা তার কাছাকাছি অঞ্চলে কোনও নির্মাণ, পরিবর্তন, ধ্বংস বা খনন অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।
এই আইনের কথা স্মরণ করিয়ে রাষ্ট্রসংঘকে লেখা চিঠিতে ইয়াকুব জানিয়েছেন, ওই কবরস্থানে যাতে কোনওরকম হামলার ঘটনা না ঘটে তার জন্য নিরাপত্তাবাহিনী মতায়েনের ব্যবস্থা করা হোক। সিনেমা, সংবাদমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়ায় এই ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে ভুল উপস্থাপনার কারণে জনমানসে ভুল ধারনা তৈরি হচ্ছে। যার ফলে অযথা প্রতিবাদ, ঘৃণা ছড়ানো ও কুশপুতুল পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। চিঠিতে ১৯৭২ সালে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত ইউনেস্কো কনভেনশনে ভারতের স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এবং আরও বলা হয়েছে, "এই ধরনের স্মৃতিস্তম্ভ ধ্বংস, অবহেলা বা বেআইনি পরিবর্তনের যে কোনো কাজ আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে।"
উল্লেখ্য, ইয়াকুব হাবিবুদ্দিন তুসি নিজেকে শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জফরের বংশধর বলে দাবি করেন। শুধু তাই নয়, তাঁর দাবি ঔরঙ্গজেবের কবর ওয়াকফ সম্পত্তির অধীনে। এবং এই সম্পত্তির মুতবল্লি (তত্ত্বাবধায়ক) তিনি নিজে। গত ১৭ মার্চ নাগপুর হিংসার ঘটনায় ইয়াকুবের আশঙ্কা এই সম্পত্তি যে কোনও দিন ধ্বংস করা হতে পারে। যার জেরেই এবার ঔরঙ্গজেবের কবর বাঁচাতে রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ হলেন ইয়াকুব।