shono
Advertisement

Breaking News

Narendra Modi

হিন্দুত্বের গনগনে আঁচ কমল! 'রামহীন' মোদির মুখে একত্রে চলার বার্তা

এক বারও নিলেন না রামের নাম, বরং জগন্নাথের প্রশংসায় মোদি।
Published By: Amit Kumar DasPosted: 02:58 PM Jun 07, 2024Updated: 04:21 PM Jun 07, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'উগ্র হিন্দুত্ব' গিলছে না দেশ। ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ্যে আসার পর তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হিন্দুত্বের গনগনে আঁচ খানিক কমিয়ে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি! শুক্রবার সংসদের সেন্ট্রাল হলে এনডিএ জোটের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার পর তেমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শুধু তাই নয়, উনিশের ৩০৩, চব্বিশে ২৪০-এ নেমে আসায় ২৫ বছর আগের 'আমিত্ব'ও কমেছে অনেকখানি। সংসদের সেন্ট্রাল হলে দীর্ঘ ভাষণে অনেকটা সময় মোদি ব্যয় করলেন এনডিএ শরিকদের উদ্দেশে।

Advertisement

গত ২ বার লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর সংসদে প্রথম ভাষণে যে ঝাঁজ শোনা গিয়েছিল মোদির মুখে, তৃতীয়বারে তার ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না। বরং অনেক নমনীয় মোদি। কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের আক্রমণ শানালেও তাদের মুসলিমদের তোষণের অভিযোগ নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। বরং আরও বেশি সতর্কভাবে জানালেন, কংগ্রেস বিদেশের মাটিতে দেশের অপমান করছে। এছাড়া দেশ চালাতে সর্বমতের কথা কার্যত প্রথমবার শোনা গেল 'হবু' প্রধানমন্ত্রীর মুখে। তিনি জানালেন, 'সরকার চালাতে প্রয়োজন হয় বহুমতের। দেশ চালাতে প্রয়োজন সর্বমতের।' অর্থাৎ শক্তি খোয়ানোর পর মোদি সরকারের তৃতীয় মন্ত্রিসভায় যে সর্বমতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে সেটা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি।

[আরও পড়ুন: ভোট মিটতেই ঘোষিত নয়া রেপো রেট, স্বস্তি পেল আমজনতা?]

শুধু তাই নয়, শুক্রবার সংসদের সেন্ট্রাল হলে এনডিএর নেতা নির্বাচনের মঞ্চে তাৎপর্যপূর্ণভাবে দেখা গেল গেরুয়া রংয়ের অবলুপ্তি। অন্যান্যবার এই ধরনের সভায় যেখানে সংসদের অন্দর সজ্জায় গেরুয়া রং তো বটেই খোদ মোদির পোশাকেও দেখা যেত গেরুয়া বাহার। এবার তার ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না। নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর দীর্ঘ ভাষণে একটি বারের জন্যও রামের নাম নিলেন না মোদি। বরং এবার তাঁর মুখে শোনা গেল জগন্নাথের নাম। ওড়িশার জনগণের বিপুল সমর্থনের জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে মোদির বার্তা, আগামী ২৫ বছরে তাঁর সরকার গড়ে তুলবে সোনার ওড়িশা। রামহীন মোদির এই ভাষণ আসলে ফৈজাবাদে হারের 'হতাশা' হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল। হিন্দুত্ববাদী বার্তা তো দূর, তৃতীয় মোদি সরকারের মুখে এবার সর্বধর্ম সমন্নয়ের বার্তা। নিজের ভাষণে মোদি বললেন, 'আমরা খ্রিষ্টান অধ্যুষিত গোয়াতে আছি, মেঘালয়, অরুণাচল এমনকী আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্যগুলিতেও রয়েছি।'

[আরও পড়ুন: কংগ্রেসের ‘দাদাগিরি’তে আপত্তি, কেন্দ্রে তৃতীয় ফ্রন্টের সরকার গঠনের চেষ্টায় অভিষেকরা!]

একইসঙ্গে অতীতের 'আমিত্ব' এবার পুরোপুরি ঝেড়ে ফেলতে দেখা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদিকে। গত ১০ বছরে যেখানে একটি বারের জন্য জোটের কথা শোনা যায়নি মোদির মুখে। সেই মোদি এবার নীতীশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নায়ডুকে পাশে নিয়ে এনডিএ জোট তথা শরিক দলগুলির ঐক্যের ভূয়সী প্রশংসা করলেন। তিনি বলেন, “অন্যান্য জোট পাঁচ বছরের জন্য হয়। কিন্তু আমাদের জোট ৩০ বছরের। ৩ বার আমরা সরকার চালিয়েছি। চতুর্থবারে পা রাখছি। এনডিএ শুধু কয়েকটি দলের জোট নয়, এটা দেশের প্রতি দায়বদ্ধ মতবাদের সমুহ। ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে স্বাভাবিক জোট। ২০২৪-এর জনাদেশে স্পষ্ট, এই দেশ শুধুই এনডিএ’র উপর ভরসা রাখে।” আরও বলেন, “পূর্ববর্তী সরকারে এনডিএ জোটের সফলতা দেখেই, মানুষ আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন। এনডিএ-র সব সরকারই সুশাসনের নজির রেখেছে। গত ১০ বছরে গরিব কল্যাণের নজির মানুষ শুধু দেখেছে তাই নয়, একই সঙ্গে অনুভবও করেছে।”

তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাংলা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করতে দেখা গেল না নরেন্দ্র মোদিকে। যে বাংলায় ভোটের পর একাধিক জায়গা থেকে হিংসার অভিযোগ তুলেছে সুকান্ত-শুভেন্দুরা। সেই বাংলা নিয়ে এবার মোদির নীরবতায় কিছুটা আশাহত বঙ্গের গেরুয়া শিবির। উগ্র হিন্দুত্ব ছেড়ে নরেন্দ্র মোদির নরম পন্থা ও সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের দাবি, আসনে এর আগে এককভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত মোদি এবার সঙ্গিদের সমর্থনে সরকারে বসছেন। ফলে সেখানে উগ্র হিন্দুত্ব বিপাকে ফেলতে পারে শরিকদলগুলিকে। সামনেই বিহার-সহ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন সেখানে হিন্দুত্বের গনগনে আঁচ বয়ে আনতে পারে বিপদ। তাই শরিকি চাপে সে আঁচ অনেকটাই কমিয়ে আনতে দেখা গেল মোদিকে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • 'উগ্র হিন্দুত্ব' গিলছে না দেশ। ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ্যে আসার পর তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
  • এই পরিস্থিতিতে হিন্দুত্বের গনগনে আঁচ খানিক কমিয়ে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি!
  • উনিশের ৩০৩, চব্বিশে ২৪০-এ নেমে আসায় ২৫ বছর আগের 'আমিত্ব'ও কমেছে অনেকখানি।
Advertisement