সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাজুটির জয়ের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী কুরসি নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে ঝুলে রয়েছে শপথগ্রহণ পর্ব। দু'দফায় দিন বদলের পর এবার জানা যাচ্ছে, আগামী ৫ ডিসেম্বর আজাদ ময়দানে হতে চলেছে মহারাষ্ট্রের নয়া সরকারের শপথগ্রহণ। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শনিবার এমনটাই জানালেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে।
২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভার ফলপ্রকাশ হয় গত ২৩ নভেম্বর। সেখানে বিজেপি একাই পেয়েছে ১৩২টি আসন। অন্যান্য শরিক শিবসেনা ও এনসিপি যথাক্রমে পেয়েছে ৫৭ ও ৪১টি আসন। অর্থাৎ মহাজুটির মিলিত আসন সংখ্যা ২৩০। যেখানে ম্যাজিক ফিগার ১৪৫। বিরাট এই জয়ের পর প্রথমে শোনা যাচ্ছিল ২৬ নভেম্বর হবে শপথগ্রহণ পর্ব। তবে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন দেবেন্দ্র ফড়ণবিস নাকি একনাথ শিণ্ডে? এই জটিলতার জেরে বদলায় তারিখ। এর পর শোনা যায় ২ ডিসেম্বর হবে শপথগ্রহণ। তবে সেই তারিখেও সমস্যা সমাধানের কোনও সদর্থক ইঙ্গিত মেলেনি। কথা ছিল, সমস্যা সমাধানে শুক্রবার শিণ্ডে ফড়ণবিস ও পওয়ারকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডা। তবে তার আগেই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গ্রামে চলে যায় শিণ্ডে। বানচাল হয় বৈঠক। সম্ভবত রবিবার হতে চলেছে এই বৈঠক। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেই গত বুধবার মহারাষ্ট্রের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিণ্ডে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছি যে আমি কোনও বাধা হয়ে দাঁড়াব না। তিনি যা বলবেন আমি সেটাই মেনে নেব।” প্রকাশ্যে শিণ্ডে এমন দাবি করলেও শিবসেনা শিবিরে কিন্তু অন্য দাবি উঠেছে। ‘বিহার মডেলের’ প্রসঙ্গ টেনে শিন্ডে সেনার মুখপাত্র নরেশ মাশকে জানিয়েছেন, ‘‘বিহারে যেমন বিজেপি আসনসংখ্যার দিকে না-তাকিয়ে নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল, তেমনই এখানেও শিণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত।’’ বুধবার শিণ্ডে শিবিরের আর এক বিধায়ক সঞ্জয় শিরসাত স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “একনাথ শিণ্ডেকে সামনে রেখেই বিধানসভা নির্বাচনে লড়া হয়েছিল। তাই তিনিই মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার। শিণ্ডে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করবেন না।”
যদিও বিজেপি চাইছে মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার তারাই। এক্ষেত্রে দেবেন্দ্র ফড়ণবিসকে মুখ্যমন্ত্রী রেখে অজিত পওয়ার ও শিণ্ডেকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হোক। যদিও এই পরিকল্পনায় শিবসেনা গররাজি বলেই জানা যাচ্ছে। এহেন জটিলতার মাঝেই সংবাদমাধ্যমকে মহারাষ্ট্রের বিজেপি সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে জানিয়ে দিলেন, আগামী ৫ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে হতে চলেছে শপথ। তবে শিণ্ডে বিজেপির এই প্রস্তাব মেনে নেবেন কিনা তা অবশ্য সময় বলবে।