সোমনাথ রায়, আহমেদাবাদ: বিজেপিকে রুখতে পারে শুধু কংগ্রেস। আর কেউ নয়। এটা বিচারধারার লড়াই। আহমেদাবাদে দলীয় অধিবেশন থেকে হুঙ্কার রাহুল গান্ধীর। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁর মুখে আত্মসমালোচনার সুরও শোনা গেল। রাহুল মেনে নিলেন, ব্রাহ্মণ, দলিত, মুসলিমদের মধ্যে আটকে গিয়েছে কংগ্রেস। আর সেকারণেই হাতছাড়া হয়েছে ওবিসি ভোটব্যাঙ্ক। সেটা পুনরুদ্ধার করা দরকার।
মঙ্গলবার কংগ্রেসের কর্মসমিতির বৈঠকে রাহুলের মুখে শোনা গেল অনগ্রসর শ্রেণির প্রতিনিধিত্বের কথা। মঙ্গলবার বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠকে দলের নেতাদের ওবিসিদের প্রতি নজর দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, "কংগ্রেস ব্রাহ্মণ, দলিত ও মুসলিমদের মধ্যে আটকে গিয়ে ওবিসিদের কথা ভুলে গিয়েছে। মুসলিম-সহ সংখ্যালঘুদের সমস্যা নিয়ে আমরা সরব হই বলে সমালোচনা হয়। কিন্তু ভয় পেলে চলবে না।" ওবিসিদের সমর্থন আদায়ে আরও ‘সক্রিয়’ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। দলের নেতারা মনে করছেন, আগামী দিনে দলের রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হতে গেলে ওবিসি ভোটে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি।

বুধবার অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি ফের জোরালোভাবে সওয়াল করলেন জাতগণনার পক্ষে। বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, "মোদিজিকে বলেছিলাম জাতিগণনা করান। অংশীদারিত্বের আসল তথ্য আসবে। কিন্তু ওরা জানতে চায় না। জানাতে চায় না কাদের কত অংশীদারি। লুকোতে চায়। সামনে বলেছিলাম, যত চেষ্টা করার করে নিন, সংসদে আপনাদের চোখের সামনে আইন পাশ করিয়ে ছাড়ব।" তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সরকার ইতিমধ্যেই জাতগণনা করিয়েছে। সেটা মনে করিয়ে রাহুল বলেন, "৯০% ওবিসি-সহ পিছিয়ে থাকা। অথচ কর্পোরেট সেক্টরের উচ্চপদে একজনও নেই। আজকাল শ্রমিকদের গিগ কর্মী বলা হয়। সবাই হয় ওবিসি, না হয় দলিত, নয়তো বা আদিবাসী। তাহলেই অবস্থা বুঝুন। তেলেঙ্গানায় সব ক্ষেত্রে সব তথ্য দিতে পারব। এই সমীক্ষার পরই ওবিসি সংরক্ষণ বাড়িয়ে ৪২ শতাংশ করা হয়।" রাহুল স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দরকারে সংরক্ষণের সর্বাধিক সীমা ৫০ থেকে বাড়াতে হবে।"
জাতিগত জনগণনা নিয়ে সরব হওয়ার পাশাপাশি রাহুল স্পষ্ট বলে দিলেন, লড়াইটা বিজেপির বিরুদ্ধে। আর এই লড়াইয়ে কংগ্রেস ছাড়া আর কেউ দাঁড়াতে পারবে না। বিরোধী দলনেতা বলছেন, "এটা বিচারধারার লড়াই। যাদের বিচারধারা নেই, তারা এই লড়াইটা পারবে না।" রাহুল মনে করান, "স্বাধীনতার লড়াই শুধু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ছিল না, আরএসএসের বিরুদ্ধেও ছিল। রামলীলা ময়দানে সংবিধান পুড়িয়েছিল ওরা। আজও তেরঙ্গায় স্যালুট করে না।"