সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার মাদ্রাজ হাই কোর্টের বিচারপতি জিআর স্বামীনাথনের বিরুদ্ধে ‘ইমপিচমেন্ট’ প্রস্তাব আনল বিরোধীরা। মঙ্গলবার ইন্ডিয়া জোটের নেতারা লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে প্রস্তাবটি জমা দিয়েছেন। প্রস্তাবটিতে মোট ১২০ জন সাংসদ স্বাক্ষর করেছেন বলে খবর।
‘ইমপিচমেন্ট’ প্রস্তাবে অভিযোগ করা হয়েছে, বিচারপতি স্বামীনাথনের রায় পক্ষপাতদুষ্ট এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত। যা বিচার বিভাগের স্বচ্ছতাকে নষ্ট করে। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের একজন সিনিয়র আইনজীবী এবং অন্যান্য বেশ কয়েকজন আইনজীবীদের প্রতিও পক্ষপাত দেখানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এধরনের কার্যকলাপ ধর্মনিরপেক্ষ সাংবিধানিক নীতি বিরুদ্ধ। ‘ইমপিচমেন্ট’ প্রস্তাবটি দেশের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের কাছেও পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, 'ইমপিচমেন্ট' প্রস্তাব পেশ হওয়ার অর্থ হল অভিযুক্ত ওই বিচারপতির অপসারণ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ। সংবিধানের ১২৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সেই প্রস্তাবের পক্ষে সাংসদদের সই করে স্পিকারের কাছে জমা দিতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় সংসদের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে এই প্রস্তাব গৃহীত হতে হবে। তবে অভিযুক্ত যদি দোষী না হন সেক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না এবং প্রস্তাব বাতিল হবে। আর যদি দোষী সাব্যস্ত হন সেক্ষেত্রে প্রস্তাব পাশ হওয়ার পর বিচারপতিকে অপসারণের জন্য তা পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির কাছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৪ মার্চ তৎকালীন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি ভার্মার বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড ও বিপুল পরিমাণ পোড়া টাকা উদ্ধারের ঘটনায় সাড়া পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশে। অভিযোগ ওঠে, পুড়ে যাওয়া ওই নোটের বান্ডিল ছিল হিসাব বহির্ভূত টাকা। তাঁর বিরুদ্ধেও 'ইমপিচমেন্ট' প্রস্তাব আনা হয়েছিল। মামলার তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ঋণ সদস্যের আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। এই কমিটি বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পেলেও সেভাবে এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। শুধুমাত্র দিল্লি হাইকোর্ট থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় এলাহাবাদ হাইকোর্টে। ঘটনার জেরে বারবার এই ইস্যুতে সরব হয়েছে সরকার পক্ষ। প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন এই ঘটনায় এখনও কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। সব মিলিয়ে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কার্যত মুখোমুখি দাঁড়ায় সরকার ও দেশের বিচারব্যবস্থা।
