সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্কুলে ভরতি হতে গিয়ে পড়ুয়াদের ধাক্কা। তাদের জানতে হবে আদৌ তাদের বাবা নোংরা কাজের সঙ্গে যুক্ত কি না! হরিয়ানায় স্কুলে ভরতির ফর্মে জিজ্ঞেস করা হল এ কথা। অস্পৃশ্যতার রাজনীতি খুঁচিয়ে তোলার অভিযোগে সরব বিরোধীরা।
[ বিজেপি বিধায়কের ভয়ে হোটেলে বন্দি উন্নাওয়ের নির্যাতিতা, মিলছে না জলও ]
গোটা হরিয়ানা জুড়ে বেসরকারি স্কুলে ভরতির ক্ষেত্রে এই ফর্ম দেওয়া হয়েছে। দু’পাতার এই ফর্মের শেষ পাতায় উঠে এসেছে প্রশ্নটি। একেবারে সোজাসাপটা ভঙ্গিতে জানতে চাওয়া হয়েছে, পড়ুয়ার অভিভাবক কি নোংরা কাজের সঙ্গে যুক্ত? নোংরা বলতে ঠিক বোঝানো হয়েছে? হরিয়ানার দিকে তাকালে অবশ্য এ প্রশ্নের অর্থ বুঝতে অসুবিধা হয় না। জাত-পাতের রাজনীতি প্রবল এ রাজ্যে। সেই সঙ্গেই ঘুরে বেড়াচ্ছে অস্পৃশ্যতার হাওয়া। ছোট জাত, নিচু জাত বা বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের প্রতি অবজ্ঞা-অবহেলা প্রবল। সেই বিষ এবার ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে পড়ুয়াদের মধ্যেই। অভিযোগ এমনটাই। ফর্মে শুধু অভিভাবকদের পেশাই জানতে চাওয়া হয়নি, জিজ্ঞেস করা হয়েছে তাঁরা কোনও নোংরা কাজে যুক্ত কি না। ব্যবহার করা হয়েছে ‘আনক্লিন অকুপেশন’ শব্দটি। এছাড়া অভিভাকদের আধার নম্বর, ধর্ম ও জাতের কথাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
হরিয়ানার খাট্টার সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি জাতপাতের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা। তাঁর দাবি, পড়ুয়াদের অস্পৃশ্য বলে ও তাদের অভিভাবকদের পেশাকে নোংরা বলা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা যায় না।
সরকারি আধিকারিকরা অবশ্য পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন। জানান, তাঁরা এ বিষয়ে কিছু জানেন না। কী হয়েছে তা তাঁদের অজ্ঞাত। যদিও ফর্মে হরিয়ানা সরকারের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষরা জানাচ্ছেন, এই তথ্যের সঙ্গে স্কুলের কোনও সম্পর্ক নেই। রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের প্রয়োজনেই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছিল। কেরলে লক্ষাধিক পড়ুয়া ফর্মে ধর্মের কোনও উল্লেখ করেনি। কিছুদিন আগে সে তথ্য সামনে এলে সাধুবাদ জানায় গোটা দেশ। অন্যদিকে ঠিক তার উলটো ছবি দেখা গেল হরিয়ানায়। যেখানে খুঁচিয়ে দেওয়া হল জাতপাতের রাজনীতি, সেই স্কুলস্তরেই।
The post ‘বাবা কি নোংরা কাজে যুক্ত’? হরিয়ানার স্কুলে ভরতির ফর্মে ফিরল জাত-পাতের ‘ভূত’ appeared first on Sangbad Pratidin.