সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঙালির অতি পরিচিত রেড়ির তেলই কিনা এখন রাসায়নিক অস্ত্র! গুজরাটে তিন আইএস জঙ্গি গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই আলোচনায় উঠে এসেছে রাইসিন। জানা গিয়েছে, রাইসিন নামে এক বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করে কার্যত গণহত্যার ছক কষছিল ওই তিন জঙ্গি। তার জন্য একাধিক জনবহুল এলাকা রেকি করেছিল তারা। ধৃতদের মধ্যে একজন এমবিবিএস ডিগ্রিধারী।
রবিবার গুজরাট এটিএস গ্রেপ্তার করে আইএস যোগ থাকা তিনজনকে। ধৃতদের মধ্যে একজন আহমেদ মহিয়াউদ্দিন সাইয়েদ। হায়দরাবাদের বাসিন্দা আহমেদ চিন থেকে ডাক্তারি পাশ করেছে। মূলত সেই রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির মূল পাণ্ডা। রাইসিন ব্যবহার করে রাইজিন নামে এক বিষাক্ত পদার্থ তৈরির পরিকল্পনা ছিল তার। সেই রাসায়নিক অস্ত্রের কিছু অংশ গুজরাটের এক পরিত্যক্ত রাখা রয়েছে বলেও দাবি করেছে সে। আপাতত সেই দাবি খতিয়ে দেখছে এটিএস।
তারপরেই চর্চা চলছে, কি এই রাইসিন? আসলে এই রাইসিনের সঙ্গে বাঙালি অতি পরিচিত। ত্বকের সমস্যায় ব্যবহৃত ক্যাস্টর বীজ থেকেই পাওয়া যায় এই বিষাক্ত রাইসিন। ক্যাস্টর বীজ থেকে বের করা তেল ব্যবহার হয় ত্বকের জন্য। এই ক্যাস্টর অয়েলকে বাঙালি চেনে রেড়ির তেল নামে। মূলত ভারত, চিন এবং ব্রাজিলে ক্যাস্টর অয়েল তৈরি হয়। ক্যাস্টর গাছও খুবই সহজলভ্য। তেল বের করে নেওয়ার পর বীজের বাকি থাকা অংশ থেকেই মেলে রাইসিন। প্রত্যেক বীজে ১ থেকে ৫ শতাংশ রাইসিন থাকে।
এই রাইসিন মানবদেহের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এখনও পর্যন্ত রাইসিনের কোনও অ্যান্টিডোট মেলেনি। মূলত ত্বকের মাধ্যমে এবং শ্বাসের মাধ্যমে এই রাইসিন মানবদেহে প্রবেশ করে। খাবারের সঙ্গে মিশেও রাইসিন ঢুকতে পারে মানবদেহে। একবার রাইসিন ঢুকলে দেহের কোষগুলিতে প্রোটিন সিনথেসিস বন্ধ হয়ে যায়। তার জেরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। যদিও রাইসিন দিয়ে বিষ তৈরি করে নাশকতার ঘটনা খুবই বিরল। ১৯৭৮ সালে বুলগেরিয়ার সাংবাদিক গোর্গি মারকভের খুনের ঘটনায় ব্যবহার হয়েছিল রাইসিন।
