সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রেমের ঝড় ভেঙে দিয়েছিল সীমান্তের কাঁটাতার। শত্রুদেশ রাশিয়ার (Russia) যুবকের প্রেমে পড়েছিলেন ইউক্রেনীয় (Ukraine) যুবতী। কিন্তু প্রেমের পরিণতি হিসেবে বিয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল দু’দেশের সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতি। দু’জনেই বুঝেছিলেন, চিরশত্রুরা কোনওদিন তাঁদের মিলন হতে দেবে না। তাই শান্তির দেশে তাঁরা নিজেদের প্রেমকে পরিণতি দিলেন। রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে প্রেমিক যুগল পালিয়ে আসেন ভারতে (India)। ছবির মতো সুন্দর হিমাচলের ধরমশালার রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে বসেছিল তাঁদের বিয়ের (Marriage) আসর। বিদেশিদের বিয়ে ঘিরে এলাকায় উৎসবের সে এক অন্য রং। হিমাচলের ঐতিহ্যবাহী নাচ-গানের সঙ্গে সনাতন ধর্মের মন্ত্রোচ্চারণে বিয়ের ফুল ফুটল দুই তরুণ, তরুণী।
রাশিয়ার যুবক সের্গেই নোভিকা, যুবতীর নাম ইলোনা ব্রামোকা। নোভিকা কর্মসূত্রে ইজরায়েলের (Israel) বাসিন্দা। দু’জনে বিয়ের পরিকল্পনা করতেই দেশে বেঁধে গেল যুদ্ধ। নোভিকা ও ব্রামোকার দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে যুযুধান। বছরের প্রায় গোড়া থেকে রণে ব্যস্ত দুই রাষ্ট্র। শান্তি উধাও, অশান্তিই যেন স্থায়ীভাবে ঘাঁটি গেড়েছে। এই অবস্থায় নোভিকা, ব্রামোকা দু’জনেই বুঝতে পারেন, এখন বিয়ে করার মতো পরিস্থিতি নেই, অদূর ভবিষ্যতেও হবে না। আর তা বুঝেই পরিকল্পনা বদল।
[আরও পড়ুন: কীভাবে বিপুল সম্পত্তির মালিক? এবার নজরে অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠ ইঞ্জিনিয়ারের লকার]
সম্প্রতি নোভিকার হাত ধরে ধরে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে সোজা ভারতে আসেন ব্রামোকা। এই শান্তির দেশকেই তাঁদের মিলনক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেন। হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) ধরমশালার মন্দিরে বিয়ের সাজে হাজির হলেন ব্রামোকা, নোভিকা। পাত্রের সঙ্গে আবার স্থানীয় মানুষজন, বরযাত্রীর মতো ডিজে বাজিয়া, নাচ-গান করতে করতে হাজির তাঁরা। যে যার মতো বিয়ের পোশাক পরে মন্দিরে গেলেও সেখানে পুরোপুরি ভারতীয় বর-কনের সাজে সাজানো হয়। ব্রামোকার মাথা ঢেকে দেওয়া হল লাল চেলিতে। আর নোভিকার গায়ে উত্তরীয়। পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণে তাঁরা সাত পাক ঘুরে চিরজীবন একে অপরের পাশে থাকতে অঙ্গীকারবদ্ধ হলেন। পরে অবশ্য গির্জায় গিয়ে নিজেদের ধর্মমতে বিয়ে সারেন।
নোভিকা-ব্রামোকার বিয়েতে পাত পেড়ে খেলেন ধরমশালার (Dharamshala) বহু মানুষ। মনেই হল না যে দুই বিদেশির বিয়ের আসর। সকলেই বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের দুই যুবক, যুবতী এখানে এসে সকলের সঙ্গে দারুণভাবে মিশে গিয়েছেন। আর তাঁদের আন্তরিকতাই এহেন আয়োজনের পক্ষে সবচেয়ে সুবিধাজনক বলে মনে করছেন।