সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তাল বাংলাদেশ। দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। পদত্যাগও করেছেন। বাংলাদেশে ইতিমধ্য়ে অন্তর্বতী সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করেছে সেনাবাহিনী। সূত্র থেকে খবর মিলেছিল দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন হাসিনা। flightradar24- অ্যাপে ধরা পড়েছিল হাসিনার বিমানের রুট। তবে সেখানেই দেখা গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড পেরিয়ে উড়ছিল বিমান। কিন্ত হঠাৎ করেই বিমান উধাও! ফ্লাইরেডারে ধরা পড়ছে না হাসিনার বিমানের সঠিক অবস্থান। স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে ধোঁয়াশা। কোথায় রয়েছেন শেখ হাসিনা? কোথায় বা নামবে তাঁর বিমান? ওয়াকিবহল মহল মনে করছেন, নিরাপত্তার খাতিরেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিমানের যাত্রাপথ চিহ্নিত করার সূচক। যাতে নিশ্চিন্তে হাসিনাকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেকথাই মাথায় রাখা হয়েছে।
ছবি সৌজন্যে- flightradar24
[আরও পড়ুন: ‘স্বাধীন দেশে স্বাগত’, হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়তেই ‘নিকৃষ্ট, নিষ্ঠুরতম স্বৈরশাসক’ কটাক্ষ ফারুকীর]
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গড়ছে সেনা। সোমবার দুপুরে ঘোষণা করলেন সে দেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরই পড়শি দেশে কার্যত সেনাশাসন ফিরল। সমস্ত হত্যার বিচার করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। পাশাপাশি, উন্মত্ত জনতাকে শান্তি বজায় রাখার আর্জিও জানিয়েছেন সেনাপ্রধান।
এদিন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, “রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল চলছে। একটি অন্তবর্তী সরকার গঠন করা হবে। সব হত্যার বিচার হবে। সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখুন। আমরা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।” তবে এই সরকারে আওয়ামি লিগের সদস্যরা থাকবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ, দেশজুড়ে হাসিনা ও তার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ চরমে উঠেছে। তাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা হচ্ছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারে তাদের দলের সদস্যদের রাখা হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা দানা বাঁধছে।
বাংলাদেশের উন্মত্ত জনতার উদ্দেশে সেনাপ্রধানের অনুরোধ, “দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখুন। আপনারা আমার উপর আস্থা রাখেন, একসঙ্গে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করুন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাব না। সংঘাত থেকে বিরত হন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়েছি।”
কোন কোন রাজনৈতিক দল সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেনাপ্রধান? সেই প্রশ্নের উত্তরে সেনাপ্রধান বলেন, “বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামাত-ই-ইসলামির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। অধ্যাপক আফিস নজরুল ও জোনায়েত সাকিও বৈঠকে ছিলেন।” পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এখন বঙ্গবভনে যাব। সেখানে অন্তবর্তী সরকার গঠনের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হবে।” ক্ষুব্ধ ছাত্রদের শান্ত হওয়ারও পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশ জুড়ে চলছে কারফিউ। উপেক্ষা করেই রাজপথে নেমেছেন কাতারে-কাতারে মানুষ। ঢাকার রাজপথে তাঁদের গগনভেদী প্রতিবাদী চিৎকার শেখ হাসিনাকে নিয়ে। ভাঙা হচ্ছে সোনার বাংলাদেশের জনক বঙ্গবন্ধুর মূর্তি পর্যন্ত। পদ্মাপারের ইতিহাসে এমন ‘কালো দিন’ সম্ভবত আসেনি। গোটা দেশ সেনাবাহিনীর দখলে। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বতী সরকার গড়বে সেনা।
[আরও পড়ুন: ‘লাশের হিসাব কে দেবে? কোন কোটায় দাফন হবে?’, অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ নিয়ে মন কাঁদছে স্বস্তিকার]