সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাপের কামড়কে এবার 'নোটিফায়েড ডিজিজ' হিসেবে ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। দেশে সাপের কামড়ে আক্রান্ত ও কতজনের মৃত্যু হয়েছে তার কোনও তথ্য না থাকার ফলেই এই পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। এর আগে যক্ষ্মা রোগকে 'নোটিফায়েড ডিজিজ' তালিকাভুক্ত করেছিল কেন্দ্র। এবার সেই তালিকায় ঢুকে পড়ল সর্পাঘাতে মৃত্যু এবং সাপের কামড়ে আক্রান্ত।
তিন দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের সব রাজ্যে সরকারকে এই মর্মে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব পূণ্য শলিলা শ্রীবাস্তব তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে ২০৩০ সালের মধ্যে সর্পাঘাতে মৃত্যু খানিকটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত করতে "ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান ফর প্রিভেনশন এন্ড কন্ট্রোল অফ স্নেক বাইট"-এর আওতায় গোটা দেশ জুড়ে একসঙ্গে অভিযান চালানো হবে। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবেই সাপের কামড় এবং সাপের কামড়ে মৃত্যুর প্রকৃত হিসেব রাখা অত্যন্ত জরুরি।
রাজ্যের বিশিষ্ট সর্প বিশেষজ্ঞ ডা.দয়াল বন্ধু মজুমদার কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। দয়ালবন্ধু বাবুর কথায়, "দেরিতে হলেও একটা ভালো কাজ করেছে কেন্দ্র।" তাঁর কথায়, "শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়। সাপের কামড়ে দেশে ফি বছর কত মানুষের মৃত্যু হয় তার কোনও প্রকৃত তথ্য নেই। জানা নেই কোন এলাকায় কোন সাপের কামড়ে কত জনের মৃত্যু হয়। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাপ চিহ্নিত করতে না পারার জন্য মৃত্যু হয়। সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হয় সঠিক অ্যান্টি স্নেক ভেনামের জন্য রোগী মারা যাচ্ছে।"
এই প্রবীণ চিকিৎসক তথা সর্প বিশেষজ্ঞের কথায়, "গত দশ বছরের বেশি সময় ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছি। একটা কথা মনে রাখতেই হবে এলাকা ভিত্তিক সাপের বিষের রকমফের হয়। তাই নোটিফাইয়েড ডিজিজ ঘোষণা হওয়ার ফলে কেউ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে সরকারি বা বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি হলে সঙ্গে সঙ্গে তার নাম সরকারের নির্দিষ্ট পোর্টালে উঠে যাবে। একইসঙ্গে হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি আরও বেশকিছু তথ্য পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে রোগীর নাম, বয়স, ঠিকানা এলাকার নাম, কোন জাতের সাপের কামড়ে অসুস্থ, শরীরের কোন অংশে সাপে কেটেছে? কতগুলি এ ভি এস ডোজ দেওয়া হয়েছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ নথিভুক্ত করতে হবে। যদি রোগী মারা যায় তবে তাও নথিভুক্ত করতে হবে। মোট কথা সাপের কামড়ে মৃত্যু কমাতে যাবতীয় তথ্য জোগাড় করার জন্য এবার এটিকে নোটিফায়েড ডিজিজের তালিকায় ফেলা হল।