সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: এসএসসির ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। বাদী-বিবাদী পক্ষের সওয়াল জবাবের মাঝেই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার পর্যবেক্ষণ, "জানি না, ডাল মে কালা, ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়।" ওএমআর শিটে রদলবদল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, এসএসসি এখন বলছে যোগ্য-অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের আলাদা করা সম্ভব। কিন্তু হাই কোর্ট কেন বলল তাঁদের আলাদা করা সম্ভব নয়? কোন কোন ওএমআর শিটের তথ্য ক্যাপচার করে রাখা হয়েছে, তা স্কুল সার্ভিস কমিশনকে দুপুর ২টোর মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের তৈরি সুপার নিউমেরারি পদ নিয়েও। প্রশ্নের মুখে সিবিআই তদন্তও।
আজ, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার এজলাসে মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানির শুরু থেকেই প্রশ্নের মুখে পড়ে এসএসসি ও রাজ্য় সরকারকে। অভিযোগ, সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি করা হয়েছিল অযোগ্যদের চাকরি বহাল রাখার জন্য। এর পর প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, "অযোগ্যদের খুঁজে বার না-করে সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি করলেন। ওই সময় কেন এটা করলেন? আপনারা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন অযোগ্যদের বাদ দেওয়া হবে না।" যদিও রাজ্যের আইনজীবীর দাবি, হাই কোর্টের অনুমতি কোনও নিয়োগ সম্ভব নয়। আর সিবিআই যখন নির্দিষ্ট সংখ্যক অযোগ্যদের চিহ্নিত করতে পেরেছে তাহলে কেন সকলের নিয়োগ বাতিল করা হবে?
প্রশ্ন উঠেছে ওএমআর শিট সংরক্ষণ নিয়েও। প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ওএমআর শিট কি নষ্ট করা হয়েছিল? নষ্ট করলেও তা কত দিনের মধ্যে? রাজ্যের উত্তর, এক বছর পরে ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়। তবে‘মিরর ইমেজ’ সংরক্ষণ করে রেখেছে এসএসসি। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “সাধারণভাবে এটা ঠিক নয়। কেউ ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ সংরক্ষণ করে রাখেনি। এসএসসি করেনি। তারা দায়িত্ব দিয়েছিল নাইসাকে। তারাও করেনি। নাইসা আবার স্ক্যানটেককে তথ্য দেয়। তারাও সংরক্ষণ করেনি। স্ক্যানটেক স্ক্যান করেই ছেড়ে দিয়েছিল।” এই বাদানুবাদের মাঝে এসএসসিকে দোষ দেন রাজ্যের আইনজীবী। বলেন, “কোনও টেন্ডার ছাড়াই নাইসাকে দায়িত্ব দিয়েছিল এসএসসি। তারা কেন এমন করল স্পষ্ট নয়।” প্রধান বিচারপতি বলেন, “অনেক কিছু গোপন করা হয়েছে। একটা জিনিস পরিষ্কার, আসল এবং স্ক্যান ওএমআর শিট একই নয়।” যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাই করতে মেটা ডেটা খুঁজে বার করতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। তা না হলে সুপ্রিম কোর্ট যোগ্য এবং অযোগ্য তালিকা বাছাই করতে পারবে না আদালত।