সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: বাংলাদেশে ক্রমশ বেআব্রু হচ্ছে হিন্দুদের নিরাপত্তা। যত সময় গড়াচ্ছে, ঘরে-বাইরে চাপে পড়েও এনিয়ে ভ্রূক্ষেপ করছে না ইউনুস সরকার। দেশদ্রোহের মামলা দিয়ে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুকে কারারুদ্ধ করার 'ষড়যন্ত্র' আরও গভীর হচ্ছে যেন! এনিয়ে তিনবার তাঁর জামিন মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল। আগামী বছরের প্রথম দিন পর্যন্ত তাঁকে কারাগারেই থাকতে হবে। এই পরিস্থিতিতে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবিতে সুর আরও চড়াল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন দাবি করেছেন, লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিবৃতি দিন মোদি। এদিন বাংলাদেশ ইস্যুতে রাজ্যসভায় তুমুল হই-হট্টগোল হয়। তার পর মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন।
বৃহস্পতিবার সংসদের বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূলের রাজ্য সভার সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, ''বাংলাদেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ওখানে হিন্দুদের নিরাপত্তা একেবারে নেই। এই অবস্থায় আমরা দাবি করেছি, প্রধানমন্ত্রী মোদি লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিবৃতি দিন। আমাদের দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন ইতিমধ্যে রাজ্যসভায় এই দাবি তুলেছেন। ভোটের সময় ওঁরা হিন্দু হিন্দু করেন আর বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের বেলায় চুপ কেন?''
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই হিন্দুদের উপর লাগামছাড়া নিপীড়নের ধারাবাহিক ঘটনায় ক্রমশই অবনতির পথে হাঁটছে প্রতিবেশী দেশটি। মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল। সদ্যই ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিসরি ঢাকা গিয়ে এই বিষয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে এসেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা খোদ ইউনুসের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে। হিন্দুদের সুরক্ষা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন বিক্রম মিসরি। এত কিছুর পরও চিন্ময় প্রভুর জামিনের শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে বৃহস্পতিবার। ভারতে এই মুহূর্তে জাতীয়তাবাদী সরকার প্রতিবেশী দেশে হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে, সেটাই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু এনিয়ে বিদেশমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা বিরোধীদের সমালোচনার পথ প্রশস্ত করেছে। তৃণমূলও তা নিয়ে সুর চড়াল।