shono
Advertisement
Union Budget

সাহসী হতে পারলেন না মোদি, সংস্কার এড়িয়ে বাজেট রইল ভোটমুখীই

বাজেটে স্রেফ জনমোহিনী হয়ে ওঠাই যেন লক্ষ্য ছিল মোদির।
Published By: Biswadip DeyPosted: 01:24 PM Feb 01, 2025Updated: 01:48 PM Feb 01, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বাজেট পেশ করলেন শনিবাসরীয় সকালে। সাকুল্যে ১ ঘণ্টা ১৬ মিনিটের ভাষণ। যা নিয়ে চর্চা দেশজুড়ে। আগে থেকেই প্রশ্ন ছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার কি ঝোড়ো ইনিংস খেলতে পারবে? নাকি সাবধানে পা ফেলাই সমীচীন মনে করা হবে? বাজেট ভাষণের শেষে এটা পরিষ্কার, ১৯৯১ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং ও প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও যে সাহস দেখিয়েছিলেন তা দেখাতে পারেননি মোদি।

Advertisement

এদিনে বাজেট ভাষণে নির্মলা তেলুগু কবি গুর্জরা আপ্পা রাওয়ের একটি কবিতার পঙক্তি ব্যবহার করেছেন। সেই লাইনটি হল 'দেশামান্তে মাট্টি কারোই, দেশামান্তে মানুষুলোই'। অর্থাৎ দেশ বলতে কেবল তার মাটি নয়, দেশ বলতে সেখানে বসবাসকারী মানুষ। আর সেই কথাই মাথায় রাখা হয়েছে এবারের বাজেটে। যার মধ্যে 'জিরো পভার্টি'র মতো নানা লক্ষ্যমাত্রার কথা বলা হয়েছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে মাথায় রাখা হয়েছে GYAN-এর কথাও। অর্থাৎ গরিব, ইয়ুথ (তরুণ), অন্নদাতা ও নারী।

এবারের বাজেটে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর ছাড়ের ঘোষণা করা হয়েছে। যা নিঃসন্দেহে একশ্রেণির বেতনভুকদের জন্য বড় স্বস্তি। বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে দিতে হবে না কর। তবে এই সুবিধা পাবেন নতুন কর কাঠামোর অন্তর্ভুক্তরা। যে টাকা সাশ্রয় হবে তা আখেরে বাজারেই ঘোরাফেরা করবে। ফলে বাজারও কিছুটা চাঙ্গা হবে। এরই পাশাপাশি MSME (ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প) বৃদ্ধিতে নতুন ঋণ প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। যাতে নিশ্চিত ভাবেই লাভবান হবে তফসিলি জাতি ও উপজাতি। ঋণদান প্রক্রিয়া শুরু হবে সহজ শর্তে। ৫ কোটি থেকে ঋণের অঙ্ক বেড়ে হয়েছে ১০ কোটি। স্টার্টআপের ক্ষেত্রে ঋণের অঙ্কও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি টাকা।

কিন্তু এতদসত্ত্বেও এবারের বাজেটে স্রেফ জনমোহিনী হয়ে ওঠাই যেন লক্ষ্য ছিল মোদির। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা এমনটাই। শুক্রবার অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে জিডিপির হার নিম্নমুখী থাকবে। তা ঘোরাফেরা করবে ৬.৩ থেকে ৬.৮ শতাংশের মধ্যে। এরপর অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চালিয়ে খেলতে হবে। অর্থাৎ পাওয়ারপ্লে ধাঁচের ব্যাটিং করতে হবে মোদিকে। তাতে হয়তো প্রাথমিক ভাবে একটা ধাক্কার মুখে পড়তে হবে। আর যাই হোক, মূল্যবৃদ্ধি হলে আমজনতার যেমন নাভিশ্বাস উঠবে, তেমনই বিরোধীরাও সেই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে বিরোধিতার পথে নামতে পারে। কিন্তু এটুকু ঝুঁকি ছিল সময়ের দাবি। কেননা সুদূরপ্রসারী দিক দিয়ে দেখলে এটাই হয়তো সঠিক পথ ছিল। কিন্তু তেমন কোনও পদক্ষেপ করল কই মোদি সরকার?

আসলে এর আগের দুটো দফায় বিজেপির হাতেই ছিল নিরঙ্কুশ ক্ষমতা। কিন্তু ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা আর পায়নি পদ্ম শিবির। ফলে মোদি ৩.০ সরকার আসলে জোট সরকার। তাই সবদিকে খেয়াল রেখে সাবধানি পথেই হাঁটল সরকার। যদিও মোদির প্রধানমন্ত্রিত্বে কখনওই তেমন বড় কোনও সংস্কারের পথ বাছতে দেখা যায়নি সরকারকে। অটলবিহারী বাজপেয়ীও কিন্তু তেমনই পথে হেঁটেছিলেন। কিন্তু তৃতীয়বারেও সাহসী হলেন না মোদি। বিহার, দিল্লির ভোটকে মাথায় রেখে ভোটমুখী হলেও এবারের বাজেটে 'ধুঁয়াধার বল্লেবাজি' দেখা গেল না। যদিও প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেছেন, ''সকলেই আপনাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত। বাজেট খুব ভালো হয়েছে।'' কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বড় অংশই বোধহয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত হবেন না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বাজেট পেশ করলেন শনিবাসরীয় সকালে।
  • আগে থেকেই প্রশ্ন ছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার কি ঝোড়ো ইনিংস খেলতে পারবে?
  • বাজেট ভাষণের শেষে এটা পরিষ্কার, ১৯৯১ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং ও প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও যে সাহস দেখিয়েছিলেন তা দেখাতে পারেননি মোদি।
Advertisement