সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) নতুন মন্ত্রিসভার রাজ্যওয়াড়ি এবং জাতিগত সমীকরণের দিকে নজর রাখলেই বোঝা যাবে, এবারের মন্ত্রিসভার রদবদল মূলত হয়েছে আগামী বছরের কয়েকটি বিধানসভা নির্বাচন এবং সর্বোপরি ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে। আগামী বছরের শুরুতেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। ভোট হবে উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, গোয়া, মণিপুরেও। আগামী বছরের শেষের দিকেই নির্বাচন প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাট এবং হিমাচলপ্রদেশে। মন্ত্রিসভার রদবদলে আগামী বছরের এই নির্বাচনগুলিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই মুহূর্তে মোদি-শাহর (Amit Shah) পাখির চোখ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন। যেখানে যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanatha) গদি বাঁচাতে রীতিমতো চাপের মুখে পড়তে হতে পারে বিজেপিকে। সেকারণেই সম্ভবত মন্ত্রিসভার রদবদলের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশ বিজেপিকে ‘বুস্টার ডোজ’ দিলেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন মন্ত্রিসভায় উত্তরপ্রদেশ থেকে জায়গা পেলেন আট মন্ত্রী। ছ’জন মন্ত্রী পেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাট। ১৮ সাংসদ থাকা বাংলাকে কোনও পূর্ণমন্ত্রী না দিলেও ৪ জন প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রও পেয়েছে ৪ জন মন্ত্রী। ৩ জন করে মন্ত্রী পেয়েছে কর্ণাটক (Karnataka) এবং বিহারও।
[আরও পড়ুন: Cabinet reshuffle: কোন মন্ত্রীর পদোন্নতি, কাদের গুরুত্ব কমল? রইল তালিকা]
সম্ভবত ভোটের কথা মাথায় রেখেই মণিপুরের সুভাষ রঞ্জন সিংকে মন্ত্রী করা হয়েছে। একই কারণে হিমাচলের মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের (Anurag Thakur) গুরুত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে নির্বাচনী রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে উত্তরপ্রদেশ থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে। সন্তোষ গাঙ্গোয়ারের মতো প্রবীণকে সরিয়ে এস পি সিংহ বাঘেল, ভানুপ্রতাপ সিংহ বর্মা, কৌশল কিশোর, বি এল বর্মা, অজয়কুমার মিশ্রের মতো নেতাদের মন্ত্রিসভায় আনা হয়েছে। এক্ষেত্রে তারুণ্যের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ জাতিগত সমীকরণ। নতুন মন্ত্রীদের মধ্যে ৩ জন ওবিসি, ৩ জন দলিত, ১ জন কায়স্থ এবং ১ জন রয়েছেন ব্রাহ্মণ। অর্থাৎ,মন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সব সম্প্রদায়কে রাজ্যের জনসংখ্যার নিরিখে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: মোদির পরিবর্তিত মন্ত্রিসভায় বাংলার ৪ মুখ, কে কোন দায়িত্ব পেলেন]
শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, একই সমীকরণ কাজ করছে উত্তরাখণ্ডেও। সেরাজ্যের নেতা রমেশ পোখরিয়ালকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে হয়েছে ভগ্ন স্বাস্থ্যের জন্য। আগামী বছরের গোড়াতেই উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা ভোট। তাই এ বারের মন্ত্রিসভার রদবদলে সেরাজ্য থেকে আরেক প্রভাবশালী ব্রাহ্মণ নেতা অজয় ভট্টকে মন্ত্রী করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির নিজের রাজ্য গুজরাট যেন এবার একটু বেশিই প্রাধান্য পেল। গুজরাটের নেতা মনসুখ মাণ্ডব্য পেলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক। আবার পুরুষোত্তম রুপালা, রাজীব চন্দ্রশেখর, দর্শনা বিক্রম জার্দোশারা, মুঞ্জাপারা মহেন্দ্রভাইরাও মন্ত্রী হলেন। সব মিলিয়ে মোদির মন্ত্রিসভায় গুজরাটের প্রতিনিধি ৬ জন। যা অন্য অনেক বড় রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি।