বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: দুর্গাপুজোর মধ্যেই পাহাড় নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। মঙ্গলবার নিজের দপ্তরে গোর্খা ইস্যু নিয়ে একপ্রস্থ ছোটো মাপের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক সেরে ফেলেছেন তিনি। পুজোর পরে আগামী নভেম্বর মাসে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ডাকও দিয়েছে শাহর দপ্তর। সেই বৈঠকে যাতে রাজ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যাতে উচ্চপদস্থ কোনও আধিকারিককে পাঠানো হয় সে কথাও মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের কথা শুনেছেন এবং ২০২১ সালের নভেম্বরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় দফা আলোচনার আহ্বান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বিশেষভাবে তাদের পদস্থ আধিকারিক পাঠাতে বলা হয়েছে।” শাহর মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এহেন বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্য সরকার যাতে গোর্খাদের ইস্যুটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখে এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সে কথাই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিমত ওয়াকিবাহলমহলের। উল্লেখ্য, এদিন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠকে হাজির ছিলেন দিল্লিতে রাজ্যের রেসিডেন্ট কমিশনার কৃষ্ণ গুপ্ত। বৈঠকে শাহ বলেছেন, “দার্জিলিং পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্স অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি মোদি (Narendra Modi) সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার গোর্খা এবং অঞ্চল সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: ‘কাশ্মীরে নতুন যুগের সূচনা’, অমিত শাহর প্রশংসায় মানবাধিকার কমিশন, পালটা মেহেবুবার]
বৈঠকে গোর্খাদের তরফ থেকে দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা হাজির ছিলেন। হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী আলিপুরদুয়ারের বিজেপি (BJP) সাংসদ জন বার্লাও। জানা গিয়েছে, জিটিএর (GTA) নির্বাচন হচ্ছে না বলে শাহর কাছে অভিযোগ করেছেন বিস্তা। অপরদিকে পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্স অঞ্চলের ১১টি জনজাতিকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বার্লা। বৈঠকে পাহাড় সম্পর্কিত নানান ইস্যু বিশদে বিস্তা তুলে ধরেছেন। শাহর দপ্তরের বিবৃতিতে তার আভাসও মিলেছে। তাতে বলা হয়েছে, “কেন্দ্র গোর্খা প্রতিনিধি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভাপতিত্বে গোর্খাদের সমস্যা সমাধানের লক্ষেই এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। গোর্খা প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন দার্জিলিং সাংসদ রাজু বিস্তা। তিনি গোর্খা এবং অঞ্চল সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন।”
[আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের মাটি যেন সন্ত্রাসের উৎস না হয়, G-20 বৈঠকে সাফ বার্তা মোদির]
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায়, সংখ্যালঘু বিষয়ক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা, উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব অনিল কুমার ঝা প্রমুখ। গোর্খাদের প্রতিনিধি দলের মধ্যে দার্জিলিংয়ের বিধায়ক নীরজ জিম্বা, কার্শিয়াংয়ে বিধায়ক বি পি বাজগাইন ওরফে বি পি শর্মা, কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামা, জিএনএলএফ (GNLF) প্রধান মান ঘিসিং, সিপিআরএম প্রধান আরবি রাই, গোরানিমো প্রধান দাওয়া পাখরিন, এবিজিএল প্রধান প্রতাপ খতি এবং সুমুমো প্রধান বিকাশ রায় বৈঠকে হাজির ছিলেন।