সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের বাংলা নিয়ে মুখ খুললেন প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। বাংলা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দেওয়ার রিপোর্টের একটি বাক্যকে উদ্ধৃত করেন তিনি। বলেন, “আমি যখন বাংলার রাজ্যপাল ছিলাম তখন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট দিয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, বাংলায় আইনের শাসন চলে না। শাসকের আইন চলে।” মোমিনপুরের অশান্তির পর উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় ফের সেই রিপোর্টের উল্লেখ করায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিধায়ক তাপস রায় বলেন, “উনি এখনও বাংলাকে মনে রেখেছেন, এটাই আমাদের প্রাপ্তি।”
বুধবার রাজধানী দিল্লিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) তরফ থেকে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময়ে, তিনি বাংলার রাজ্যপাল থাকাকলীন সময়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে আইনের শাসনের উপরে শাসকের আইনের কথা উল্লেখ তিনি আজও ভোলেননি বলেই মন্তব্যে করেছেন। সঙ্গে সেইসময়ে মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের ভূয়সী প্রশংসাও শোনা গিয়েছেন ধনকড়ের গলাতে। উপরাষ্ট্রপতি পদের মত উঁচুস্তরের সাংবিধানিক পদে থাকা সত্ত্বেও কিভাবে তিনি দেশের একটি রাজ্য নিয়ে মন্তব্য করতে পারেন সেই প্রশ্ন উঠছে তৃণমূল শিবির থেকে।
[আরও পড়ুন: শিল্পায়নে আরও একধাপ এগোল রাজ্য, তাজপুর বন্দরের নথি আদানি গোষ্ঠীকে হস্তান্তর মুখ্যমন্ত্রীর]
সেই রিপোর্টের স্মৃতিচারণ করে বাংলার তৎকালীন রাজ্যপাল বলেন, “আমি তিনবছর বাংলার রাজ্যপাল ছিলাম। তখন বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকার কমিশন রিপোর্ট জমা দেয়। রিপোর্টের প্রথম বাক্যটা আমি কোনওদিনও ভুলব না। বাংলায় আইনের শাসন নয়, শাসকের আইন চলছে।” স্বাভাবিকভাবেই বাংলার তৎকালীন রাজ্যপালের এদিনের কথায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মনে করা হচ্ছে, রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে খোঁচা দিতেই এই কাণ্ড মন্তব্য করলেন তিনি।
ধনকড় এই ধরণের মন্তব্য করতে থাকলেও তৃণমূলও যে চুপ করে থাকবে না সেই বার্তা স্পষ্টই দিয়েছেন কুণাল। তিনি বলেছেন, “বাংলায় খাকাকালীন তিনি রাজ্যপাল পদকে বিজেপির এজেন্ট বানিয়ে গিয়েছিলেন। বাংলা নিয়ে কুৎসা করবেন, আর আমরা রসগোল্লা দেব এতটা সৌজন্য আশা করবেন না।” এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কটাক্ষের সুরে তৃণমূলের বিধায়ক তাপস রায় বলেন, “উনি এখনও বাংলাকে মনে রেখেছেন, এটাই আমাদের প্রাপ্তি।”
[আরও পড়ুন: শিল্পায়নে আরও একধাপ এগোল রাজ্য, তাজপুর বন্দরের নথি আদানি গোষ্ঠীকে হস্তান্তর মুখ্যমন্ত্রীর]
রাজ্যের সঙ্গে তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সম্পর্ক মোটেও ভাল ছিল না। শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য – প্রায় প্রতিক্ষেত্রেই রাজ্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন তিনি। কখনও টুইট আবার কখনও চিঠি পাঠিয়ে নবান্নের বিরিদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। কিন্তু উপরাষ্ট্রপতি পদে বসার পর থেকে এই বিবাদে ইতি পড়েছিল। আচমকা মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে জগদীপ ধনকড় পুরনো বিবাদ উসকে দিলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।