সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রীতিতে ছেদ পড়বে না। শ্রীকৃষ্ণের গায়ে উঠবে মুসলিম তাঁতিদের তৈরি পোশাকই। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি খারিজ করে সাফ জানিয়ে দিলেন বৃন্দাবনের বাঁকেবিহারী মন্দিরের পুরোহিত এবং মন্দির কর্তৃপক্ষ।
বৃন্দাবনের বাঁকেবিহারী মন্দিরের 'ঠাকুরজি'র সাজপোশাকের বেশিরভাগটাই তৈরি করেন মুসলিম শিল্পীরা। ঠাকুরজির মন্দিরের নকশা, মুকুট, জরদৌসি পাগড়ি, বেশিরভাগটাই মুসলমানদের তৈরি। কিন্তু এবার সেই রীতি বাতিল করার দাবি তুলেছিল স্থানীয় একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। শ্রীকৃষ্ণজন্মভূমি মুক্তি সংঘর্ষ ন্যাস নামের ওই সংগঠনের দাবি, মন্দিরের বিগ্রহের পোশাক এমন কারও তৈরি হওয়া উচিত যাঁদের ঈশ্বরে আস্থা আছে এবং এমন কাউকে বিগ্রহের পোশাক তৈরির দায়িত্ব দিতে হবে যাতে মন্দিরের পবিত্রতা বজায় থাকে। ওই সংগঠনের দাবি ছিল, মন্দিরে মুসলিমরা অর্ঘ্য দিলে সেটাও গ্রহণ করা যাবে না।
কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং পুরোহিতরা সমস্বরে হিন্দুত্ববাদীদের সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। মন্দির কর্তৃপক্ষ বলছে, হিন্দু হোক, মুসলমান হোক বা খ্রিষ্টান, সকলের বিশ্বাস ও ভক্তি প্রাধান্য পাবে সবার আগে। সকলের দেওয়া পুজোর অর্ঘ্য তাঁরা সাদরে গ্রহণ করবেন। কর্তৃপক্ষের সদস্য জ্ঞানেন্দ্র কিশোর গোস্বামী জানিয়ে দিয়েছেন, "যদি মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ ঠাকুরজির প্রতি বিশ্বাস রাখেন, তাহলে আমরা তাঁদের পোশাক গ্রহণে কোনও রকম আপত্তি করব না।" তাঁদের সাফ কথা, পোশাক দেওয়ার রীতিতে কোনও বদল আসবে না। আস্থা থাকলে যে কেউ ঠাকুরজির পোশাক দিতেই পারেন।
বৃন্দাবনের বাঁকে বিহারী মন্দির দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মন্দিরগুলির একটি। এই মন্দিরে কৃষ্ণ এবং রাধার সম্মিলিত রূপ পূজিত হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ এই মন্দিরে যান। সব ধর্মের মানুষের অর্ঘ্যই এখানে সাদরে গ্রহণ করা হয়। হিন্দুত্ববাদীদের আপত্তি সত্বেও এই রীতি বজায় রাখবে মন্দির কর্তৃপক্ষ।