বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: এক হাজার থেকে পনেরো হাজার ভোটে পরাজয়। এই ধরনের আসনগুলি চিহ্নিত করে হিসাবে ব্যস্ত রাজ্যের গেরুয়া শিবির। কারণ নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধন এই আসনগুলিতে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে বঙ্গ বিজেপি। তবে তালিকা সংশোধন তাদের পক্ষে নাকি বিপক্ষে যাবে ধন্দ রয়েছে। সংশোধন প্রক্রিয়া শেষ হলে তবেই চিত্র খানিকটা স্পষ্ট হবে। সেক্ষেত্রে অনেক আসনেই হিসেবনিকেশ ওলটপালট হবে বলে জানান বঙ্গ বিজেপির এক শীর্ষ নেতা। সেইমতো মণ্ডল কমিটিকে হিসেব করে রাজ্যে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে সংখ্যালঘু সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধানসভাগুলিকে এর বাইরে রাখা হয়েছে। এই সংখ্যাও নেহাত কম নয়।
দিল্লি ও কলকাতা। ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনঘন বৈঠক করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু তালিকা সংশোধন হলেই বঙ্গে গেরুয়া রাজ শুরু হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছেন না। কারণ তালিকায় বহু ভুয়ো ভোটার থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারনা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। সুকৌশলে রাজ্যের শাসকদল ভুয়ো ভোটার রেখে দেওয়ার কাজ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রাজ্য নেতাদের। তবে লোকসভা ভোটের নিরিখে বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফল পর্যালোচনা শেষ করে সম্ভাবনাময় বিধানসভা চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। সেই আসনগুলিতেই বেশি জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলে জানান বিজেপির এক শীর্ষনেতা। এইসব আসনে মৃত, একাধিক জায়গায় নাম থাকা ভোটার, অন্যত্র চলে যাওয়া ভোটার বা ভুয়ো ভোটার থেকে যাচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কমিশনের উপর চাপ সৃষ্টি করে যতটা সম্ভব স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। নইলে সব চেষ্টা জলে যাবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
বঙ্গের ওই শীর্ষ নেতা জানান, সম্ভাবনাময় বিধানসভা আসনের সংখ্যা একশোর বেশি। কিন্তু গতবার হাতে বেশ কয়েকটি আসন হাতছাড়া হতে পারে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির। তবে কলকাতা ও আশেপাশের জেলা থেকে বেশকিছু আসন এবার ছিনিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সবটাই নির্ভর করছে চূড়ান্ত ভোটার তালিকার ওপর। কারণ চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় কোন আসন থেকে কত ভোটার বাদ গেল এবং জনবিন্যাস কি অবস্থায় দাঁড়াল তার উপরেই সবকিছু নির্ভর করছে। এখনই হিসেবনিকেশ শেষ করা সম্ভব নয়। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর রাজ্য নেতাদের সঙ্গে দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠক করে পরিস্থিতির ফের পর্যালোচনা করবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের ওই শীর্ষ নেতা। সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হলেই রাজ্যে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ঘুরে এলেই পর্যালোচনা বৈঠক হবে বলে জানান তিনি।
রাজ্যের সব বুথে বিএলএ দিতে পারেনি দল। বিশেষ করে ১০০ শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বুথে। তবে এমন অনেক বুথ রয়েছে যেখানে কর্মী থাকা সত্বেও বিএলএ দেওয়া যায়নি। সেখানে কর্মীদের পুরনো ভোটার তালিকা রাখতে বলা হয়েছে। খসড়া তালিকা প্রকাশ হলেই মিলিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খসড়া তালিকায় অনিয়ম চোখে পড়লেই রাজ্যের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের তরফে একযোগে অভিযোগ জমা দেওয়া হবে বলে জানান ওই শীর্ষ নেতা।
