সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরোধীদের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও সরকার পক্ষে বেশি ভোট পড়ায় মঙ্গলবার সংসদে পেশ হয়েছে 'এক দেশ, এক ভোট' বিল। যদিও সরকারের ধীরে চলো নীতিতে বিল পাশ করানো হয়নি। বরং দুটি বিল পাঠানো হয়েছে সংসদের যৌথ কমিটিতে (জেপিসি)। এই অবস্থায় বিলটি কবে পাশ হয়ে আইনে পরিণত হবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। এহেন পরিস্থিতিতে দেখে নেওয়া যাক এই বিলের ভবিষ্যৎ কোন পথে।
বর্তমানে বিলটি রয়েছে জেপিসিতে। এখানে সর্বাধিক ৩১ জন সদস্য থাকতে পারেন, যার মধ্যে ২১ জন লোকসভার ও বাকি রাজ্যসভার সদস্য। শুক্রবার শেষ হচ্ছে শীতকালীন অধিবেশন। এই কমিটিতে কতজন সাংসদ থাকবেন তা ঠিক হবে দলের সাংসদ সংখ্যার ভিত্তিতে। ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলিতে সদস্যের নাম প্রস্তাবের নির্দেশ দিয়েছেন স্পিকার ওম বিড়লা। সংসদে বিজেপি যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ফলে কমিটিতে বিজেপির সদস্যই বেশি থাকবে। কমিটির সভাপতি হবেন গেরুয়া শিবিরের কোনও সাংসদ। এমনিতে এই সংসদীয় কমিটির মেয়াদ ৯০ দিন তবে প্রয়োজনে তা বাড়ানো হতে পারে।
এই কমিটি বিচার করবে 'এক দেশ, এক ভোট' সংক্রান্ত দুটি বিলে কোথাও কোনও সংশোধন বা সংযোজনের প্রয়োজন রয়েছে কিনা। এর পর বিল দুটি পেশ হবে লোকসভায়। সেখানে পাশ হলে, রাজ্যসভা হয়ে বিল দুটি যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতির শিলমোহরের পরই আইনে পরিণত হবে বিলটি। তবে লোকসভা হোক বা রাজ্যসভা বিলটি পাশ করাতে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন মোদি সরকারের। যা কোনও কক্ষেই সরকারের হাতে নেই। ফলে এই বিলে ধীরে চলো নীতি নিয়েছে সরকার। আপত্তি উঠতে পারে অনুমান করে বিল দুটি জেপিসিতে পাঠানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। সংসদে অমিত শাহ জানান, প্রধানমন্ত্রী নিজেও চান বিলটি জেপিসিতে আলোচনার জন্য যাক। শুধু জেপিসি নয়, এই ইস্যুতে সকলের মতামত নিতে আগ্রহী সরকার। জানা যাচ্ছে, দেশের সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞ, প্রাক্তন বিচারপতি, অন্যান্য সাংসদ-সহ বিধানসভার স্পিকারদের কাছ থেকেও এই বিষয়ে পরামর্শ নেবে কেন্দ্র। সাধারণ মানুষ বিল নিয়ে কী ভাবছে সরকার তাঁদের মতামতও শুনতে আগ্রহী বলে সূত্রের খবর।
এত কিছুর পরও যদি বিল পাশ হয়ে যায় তাহলেও, আগামী ১০ বছরের মধ্যে তা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ২০৩৪ সালের আগে ‘এক দেশ, এক ভোট’ হতে পারবে না। কারণ বিলের খসড়া থেকে যা বোঝা যাচ্ছে, তা অনেকটা এরকম – পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের পর প্রথম যেদিন সংসদ অধিবেশন বসবে, সেদিনটিকেই ‘প্রথম দিন’ বলে ধরা হবে। এর পরবর্তী পাঁচ বছর অর্থাৎ লোকসভার পূর্ণ মেয়াদ পর্যন্ত তা থাকবে। এখন আগামী লোকসভা নির্বাচন হবে ২০২৯ সালে। সংসদের নিম্নকক্ষে নতুন নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ হবে পরবর্তী ৫ বছর অর্থাৎ ২০৩৪ সাল পর্যন্ত। ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিলটি পাশ হলেও ততদিন পর্যন্ত আইন কার্যকর হতে পারবে না।