সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুজরাটের (Gujarat) মোরবিতে (Morbi Bridge Collapse) সেতু ভেঙে পড়ে ১৪১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল মোরবি পুর প্রশাসনকে। মঙ্গলবার ওই দুর্ঘটনা সংক্রান্ত একটি স্বতঃপ্রণোদিত জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে উচ্চ আদালত জানতে চাইল, কেন প্রাচীন সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনও টেন্ডার না ডেকে তা সরাসরি একটি নির্দিষ্ট সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হল।
হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি অরবিন্দ কুমার ও বিচারপতি আশুতোষ শাস্ত্রীর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, চুক্তিপত্রটি মাত্র দেড় পাতার। এবং সেখানে কোনও শর্তও উল্লিখিত নেই। বিচারপতিদের বক্তব্য, ”২০১৭ সালের ১৫ জুন পুরনো চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছিল। এরপর থেকে রাজ্য সরকার কিংবা মোরবি পুর প্রশাসন কী পদক্ষেপ করেছিল টেন্ডার ডাকার বিষয়ে?” সেই সঙ্গে বিস্ময় প্রকাশ করে বেঞ্চ এও জানায়, মেয়াদ ফুরনোর পরে যখন ক্ষমতায় কোনও সরকার নেই, তখনও অজন্তা (ওরেভা গ্রুপ) একই ভাবে সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করেছিল। সব মিলিয়ে মঙ্গলবার এমনই ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল প্রশাসনকে।
[আরও পড়ুন: ৮০০ কোটি ছুঁয়ে ফেলল বিশ্বের জনসংখ্যা, আগামী বছরই চিনকে টপকে যাবে ভারত]
প্রসঙ্গত, ঘড়ি ও ক্যালকুলেটর প্রস্তুতকারী সংস্থা ওরেভাকে (Oreva Company) কেন সেতু সারানোর দায়িত্ব দেওয়া হল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। আদালতে তদন্তকারীদের তরফে আগে বলা হয়েছে, আদৌ সেতু সারানোর যোগ্যতা ছিল না ওরেভার। তা সত্ত্বেও কেন সেই সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হল, তা নিয়ে লাগাতার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মোরবি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের চিফ অফিসার সন্দীপসিনকে। কোনও প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি তিনি। বরং তিনি স্বীকার করেছেন, কোনও পরীক্ষা না করেই সাধারণ মানুষের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, আসন্ন গুজরাট নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই সেতু খুলে দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ উঠেছিল প্রথম থেকেই। তদন্ত শুরু হওয়ার পরে জানা যায়, সেতু মেরামত করার পরিবর্তে কেবল সেতুর উপরে পিচের প্রলেপ করে দেওয়া হয়। বিকল হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও পালটানো হয়নি সেতুর ভারসাম্য রক্ষাকারী কেবলগুলি। এমনকি স্থানীয় জেলাশাসককে চিঠি লিখে ওরেভা কোম্পানির তরফে বলা হয়েছিল, আপাতত জোড়াতালি দিয়ে সেতু মেরামতির কাজ করে ছেড়ে দেওয়া হবে। চুক্তি সই হওয়ার পরে সঠিক ভাবে সেতুটি সারিয়ে তোলা হবে।