ইংল্যান্ড ১৯৮/৭ (কুক ৭১, ইশান্ত ৩/২৮)
দীপ দাশগুপ্ত: শুরুতেই বলে রাখি, ইংল্যান্ডে পাঁচ টেস্টের সিরিজে আজ পর্যন্ত এটাই ভারতের সেরা বোলিং। সিরিজে এ রকম বল করতে ভারতীয়দের আগে দেখিনি।
কেন বলছি? না, শুধুমাত্র ১-১৩৩ থেকে প্রথম দিনের খেলা শেষে ইংল্যান্ড ৭-১৯৮ হয়ে যাওয়া নয়। সেটা তো স্কোরবোর্ডই বলছে। অ্যালিস্টার কুক আউট হওয়ার বলটাকে ধরলে দেখা যাবে, ন’বলে তিনটে উইকেট বেরিয়েছে। প্রথমে কুক। একই ওভারে জো রুট। পরের ওভারে জনি বেয়ারস্টো। কিন্তু এ সব শুকনো তথ্য। যা স্ট্যাটসবুক ওল্টালেই দেখা যাবে। স্কোরবোর্ড যেটা বলবে না তা হল, ভারত গোটা দিন এ রকমই বল করে গিয়েছে। উইকেটটাই শুধু পড়েনি। কিন্তু খটখটে রোদে, পুরো ব্যাটিং সহায়ক পিচে, গোটা দিন ইশান্ত শর্মা, জসপ্রীত বুমরাহরা এমন অসাধারণ শৃঙ্খলায় বল করেছে যে, একটা না একটা সময় ইংল্যান্ড ভাঙতই। ইংল্যান্ডকে ভারতীয় বোলাররা আগাগোড়া ঠিক কতটা চাপে রেখেছিল, সেটা ইংল্যান্ডের ওভারপিছু স্কোরিং রেট দেখলেই বোঝা যাবে। চা পানের সময় ৬০ ওভারে ১২৮-১ ছিল ইংল্যান্ড। ওভারপিছু রান দুইয়ের সামান্য বেশি। যার মানে হল, ভারত ওভাল টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম দু’টো সেশনেই যথেষ্ট ভাল বল করেছে। শুধু প্রথম দুই সেশনে উইকেট পায়নি। শেষ সেশনে পরপর উইকেট পেয়েছে।
[সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শচীনকে সাম্মানিক ডি-লিট দেবে যাদবপুর]
ঠিক যে ভাবে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সেরা পারফরম্যান্সটা করেও মহম্মদ সামি শুক্রবার উইকেটহীন থেকে গেল। উইকেটের বিচারে দেখতে গেলে, জসপ্রীত বুমরাহ সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে ম্যাচে। অবসর টেস্ট খেলতে নামা কুক আর ইংল্যান্ড অধিনায়ক রুটকে একই ওভারে তুলে। বুমরা ইংল্যান্ড সিরিজে খেলতে নামার পর থেকেই ভারতীয় বোলিংয়ের চেহারা পালটে দিয়েছে। ট্রেন্টব্রিজে বাটলার সেঞ্চুরি করার পর ওকে আউট করল। নিজে পাঁচ উইকেট নিল। ভারতও টেস্ট জিতে গেল। আবার সাউদাম্পটনেও বাটলার-স্যাম কুরান জুটিকে ভেঙেছিল বুমরাহ। আমি আগেও লিখেছি যে, বুমরার যা অ্যাকশন তাতে ওর আউটসুইং বোঝা ব্যাটসম্যানের পক্ষে অসম্ভব কঠিন। এখন দেখছি, ব্যাটসম্যানকে ইনসুইংয়ে সেট আপ করে তার পর আউটসুইং করছে। এই সেট আপ করা সহজ নয়। জিমি অ্যান্ডারসন, ডেল স্টেইনদের মতো বিশ্বসেরা পেসাররাই একমাত্র করতে পারে।
আর বুমরাহ আসায় বাকি পেস ইউনিটও বাড়তি মোটিভেশন নিয়ে বল করা শুরু করেছে। টিমে তরুণ কোনও বোলার এসে ভাল পারফর্ম করতে শুরু করলে, এটা হয়। সিনিয়র পেসাররাও তখন তেড়েফুঁড়ে ওঠে। বুঝে যায়, আমি ভাল না করলে বসে যেতে হবে। দেশের মাটিতে এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলবে ভারত। তিন পেসার তো খেলবে না। দু’জন খেলবে। বুমরাহ যদি সেখানে অটোমেটিক চয়েস হয়, বাকিদের উপর প্রেশারটা বুঝতে পারছেন? রবীন্দ্র জাদেজার কথাও এখানে বলব। টেস্ট সিরিজে এই প্রথম খেলতে নামল। কিন্তু কী অসাধারণ জায়গায় জায়গায় বল করে গেল।
[এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জজয়ী ভারতীয় স্কোয়াশ দলের এই প্রতিনিধিকে চেনেন?]
তা হলে কি ভারত প্রথম দিনের শেষে টেস্টে এগিয়ে? আমার মতে, না। চলতি সিরিজে আমাদের বারবার ভুগিয়েছে ইংল্যান্ড লোয়ার অর্ডার। যাদের এখনও সাফ করা বাকি। মনে রাখতে হবে, বাটলার এখনও ক্রিজে। তার চেয়েও বড় হল, ভারতীয় ব্যাটিং। ব্যাটিং ব্যর্থতাই সিরিজ হারিয়েছে ভারতকে। তাই ভারত প্রথম ইনিংসে কেমন ব্যাট করে না দেখে কী করে বলা যায় ওভালে এগিয়ে?
The post ওভাল টেস্টে প্রথম দিনের শেষে চাপে ইংল্যান্ড, নজরকাড়া পারফরম্যান্স ইশান্ত-বুমরাহদের appeared first on Sangbad Pratidin.