সুব্রত বিশ্বাস: বিপর্যয় মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দিতে এবার পুরো একটি গ্রাম তৈরি করছে রেল। যে গ্রামে শুধুই রেল দুর্ঘটনা ঘটবে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে যাত্রীদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে নিরাপদ স্থলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। গ্রামে এটাই হবে প্রচলন। এই প্রচলিত পদ্ধতি রপ্ত করাটাই হবে প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য।
[লাগাতার জঙ্গি হামলায় বীতশ্রদ্ধ ভারত, পাকিস্তানের সঙ্গে বাতিল বৈঠক]
দক্ষিণ-পশ্চিম রেলে বেঙ্গালুরু-মাইশুরু লাইনে হেজাল্লার কানমিনিকে গ্রামে ৬০ একর এলাকাজুড়ে গড়ে উঠছে এই গ্রাম। গ্রামের নাম ‘ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং ইনন্সিটিউট অ্যান্ড সেফটি ভিলেজ।’ প্রাথমিকভাবে ৪৫ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য, দুর্ঘটনাস্থলে রেল অফিসার থেকে সাধারণ কর্মীরা কীভাবে কাজ করবেন, মৃত্যুর ঘটনা এড়িয়ে সহজে কাজের পদ্ধতি রপ্ত করাই হবে এখানে প্রশিক্ষণের লক্ষ্য। কোথাও রেল দুর্ঘটনা হলে তার নাটকীয় রূপ দিয়ে আবার একইভাবে দুঘর্টনা ঘটানো হবে ওই গ্রামে। সেই সময় গ্রামে উপস্থিত থাকবেন প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়া রেল অফিসার ও কর্মীরা। ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মীরা কীভাবে যাত্রীদের উদ্ধার করবেন, মেডিক্যাল টিম কীভাবে সেবা করবে, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা বৈদুতিক লাইন কীভাবে সরিয়ে ফেলবেন তারই প্রশিক্ষণ চলবে এখানে। গ্রামে ৬.৫ মিটার গভীর পুকুর খোঁড়া হয়েছে। যা এখানে নদী হিসাবে ধরা হয়েছে। নদীর উপর দুর্ঘটনা হলে কী পদ্ধতির প্রয়োগ হবে উদ্ধার কাজে। কৃত্রিম টানেল বানানো হয়েছে, একেবারে লাইনের অনুরূপে পাতা হয়েছে ২.৫ কিলোমিটারের রেল লাইন। ৫০ বর্গ মিটারজুড়ে তৈরি হয়েছে স্টেশন। দশ কামরার ট্রেন থেকে ইঞ্জিন, সিগন্যাল থেকে স্টেশন মাস্টারের প্যানেল বোর্ড সবই থাকছে এই গ্রামে। সেই গ্রামে নিত্য কৃত্রিমভাবে দুর্ঘটনা ঘটানো হবে। শুধু কর্মীদের ধাতস্ত হতে হবে। দুর্ঘটনা ঘটানোর মতো পরিবেশ তৈরি নয়, ওই গ্রামে থাকছে দুটি প্রশাসনিক ভবন, ক্লাসরুম, ল্যাবরেটরি, মডেল রুম, মাটির নিচ থেকে জল তুলে আনার ব্যবস্থা, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, যেখানে থাকছে ব্যাটমিন্টন, বাস্কেটবল, লন টেনিস, যোগ, মেডিটেশন হল ইত্যাদি। জীবন রক্ষার্থে ব্যবহার্য সামগ্রী। এজন্য আরও ২১ কোটি টাকা লাগবে। নতুন এই গ্রামে থাকবে অডিও ভিসুয়াল ভার্চুয়াল রিয়ালিটি সেন্টার।
[পাকিস্তানের মুখোশ খুলল আমেরিকা, কড়া পদক্ষেপের পথে ট্রাম্প]
এই ব্যবস্থায় কার্টুনের মাধ্যমে দুর্ঘটনা ও তার মোকাবিলার সব কিছুই দেখানো হবে। যা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। তবে তা এখনই করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, দেশে এই ধরনের প্রযুক্তিতে তৎপর সংস্থার অভাব রয়েছে। এজন্য গ্লোবাল টেন্ডার ডাকতে চলেছে বোর্ড। রেল বোর্ড জানিয়েছে, বরোদা-সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিপর্যয় মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।