shono
Advertisement

করমণ্ডল দুর্ঘটনার জের, ‘ভুতুড়ে কর্মী’ ও ‘নকল স্বাক্ষর’ এড়াতে রেলের সর্বত্র ‘বায়োমেট্রিক’ উপস্থিতি!

‘আসি যাই, মাইনে পাই’ মানসিকতা দূর করতে চায় রেল।
Posted: 02:42 PM Jun 21, 2023Updated: 06:51 PM Jun 21, 2023

সুব্রত বিশ্বাস: বাহানাগা বাজারের ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে সতর্ক হতে চাইছে রেল (Indian Railways)। সুরক্ষার ক্ষেত্রে যাবতীয় ফাঁকফোকর রুখতে বিশেষ তৎপরতা শুরু হয়েছে। এবার ‘ভুতুড়ে কর্মী’ তাড়াতে রেলের সব জায়গায় ‘আধার এনেবেল বায়োমেট্রিক অ‌্যাটেনডেন্স সিস্টেম’ চালুর নির্দেশ দিল রেল বোর্ড। একেবারে সরাসরি ‘ভুতুড়ে’ কর্মী ও সই ‘নকল’ বিষয় রুখতেই এই সিস্টেম চালুর নির্দেশ বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

সংঘবদ্ধ ক্ষেত্র যেমন ওয়ার্কশপ, বিভিন্ন দপ্তর ছাড়াও একেবারে স্টেশন, বিভিন্ন কেন্দ্র সব জায়াগায় এই বায়োমেট্রিক অ‌্যাটেনডেন্স চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাহানাগা বাজারের ভয়াবহ দুর্ঘটনা সরাসরি প্রমাণ দিয়েছে রেলের গাফিলতির। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, মৃত্যুর এই মিছিল কতটা লম্বা হতে পারে নিমেষের ভুলে।

[আরও পড়ুন: জঙ্গিপুরে বোমা ফেটে ৫ শিশু জখম, মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট তলব জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের]

রেলের তরফে একাধিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, বহু জায়গায় কর্মীদের অনুপস্থিতিতে সুরক্ষার কাজ ব‌্যহত হচ্ছে। অনেক জায়গায়, কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতের নির্ধারিত কোনওরকম সময়জ্ঞান নেই। ‘আসি যাই, মাইনে পাই’ এমন মানসিকতা কাজ করছে বহু জায়াগাতেই। এই অব‌্যবস্থা রুখতে একমাত্র ভরসা এই বায়োমেট্রিক সিস্টেম। এবং তা আধার যুক্ত। কোনওরকম ‘ভুতের’ অবির্ভাব যাতে না হতে পারে তা দেখতেই এই সিস্টেম বলে মনে করেছে পূর্ব রেলের পার্সোনেল বিভাগের আধিকারিকরা। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষার কাজে নিযুক্ত গ‌্যাংম‌্যানদের ব‌্যক্তিগত কাজে ব‌্যবহার করেন বিভাগীয় আধিকারিকরা। পূর্ব রেলে এমন ৫০০ কর্মী রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে যাদের দিয়ে ব‌্যক্তিগত কাজ করানো হয়, এমন দাবি পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষের। ফলে লাইন রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন‌্য ২০ জনের গ‌্যাংয়ের জায়গায় ১০ বা তারও কম সংখ্যক কর্মীর গ‌্যাং দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। ফলে কাজের দ্রুততা হ্রাসের পাশাপাশি গাফিলতি থেকে যায় বলে তিনি জানিয়েছেন।

[আরও পড়ুন: অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন পাকা, আমন্ত্রিত প্রধানমন্ত্রী মোদি! জেনে নিন কবে]

অভিযোগ, দক্ষিণ পূর্ব রেলের ডিজেল শেড ও ওয়ার্কশপে এমন অনেক কর্মী রয়েছেন, যাদের পরিবারের নামে রয়েছে ব‌্যবসা। ডিউটি শেষের অনেক আগেই বেরিয়ে যান ব‌্যবসার কাজ দেখতে। বহু স্টেশনে বুকিং ক্লার্করা অনুপস্থিতি থাকার ফলে হাজিরা খাতায় ‘সিএল’ লিখে দেওয়া হয়। তা সত্বেও তার উপর ওভাররাইট করে ‘স্বাক্ষর’ করে হাজিরাও দেখিয়ে দেন কর্মীরা। ভিজিল‌্যান্স বিভাগ সূত্রে এই কারচুপির খবরও জানা গিয়েছে। এমনিতেই রেলের শূন্য পদের সংখ‌্যা ৩ লক্ষ ১১ হাজার ৪৩৮। যার মধ্যে পূর্ব রেলে ৩০,৩২৭টি ও দক্ষিণ পূর্ব রেলে ১৭,৬৬১টি। এত শূন্যতার মধ্যে বাড়তি সংযোজন অনুপস্থিতির হার। স্বাক্ষরে প্রমাণ দিতে হয় না, ফলে অনুপস্থিতি ও কাজের সময় কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকাটা এখন রেলের ঘরে এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছে যা নজিরবিহীন। যা ঠেকাতে পারে একমাত্র বায়োমেট্রিক সিস্টেমের হাজিরা বলে মত আধিকারিকদের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement