সুব্রত বিশ্বাস: অবসরের আগেই কর্মীদের বসিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছে রেল। পঞ্চান্ন বছরের বেশি বয়স অথবা ত্রিশ বছর কর্মজীবন দুটোর যেটি আগে পড়বে সেই সব কর্মীদের সরানোর সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল রেল। তবে আন্দোলনের জেরে পদ্ধতিগত কিছু বদল এনে কর্মীদের সরানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে রেল। রাজস্থানের কোটা ডিভিশনে প্রথম এই ছাটাই অভিযান শুরু করা হয়েছ। রেল বোর্ডের স্টাফ বিভাগের এক কর্তার কথায়, আইন সর্বত্র একইভাবে প্রয়োগ হবে। প্রথমে রাজস্থানে শুরু হলেও ক্রমে সব জায়গাতে একইভাবে ছাঁটাই কর্মসূচি চলবে।
[আরও পড়ুন: অবশেষে পাইলটের দাবিকেই মান্যতা, রাজস্থান কংগ্রেসে বড় বদল]
বৃহস্পতিবার কোটা রেল ওয়ার্কশপের স্টোর বিভাগের এক কর্মীকে সরিয়ে দিয়েছে রেল। তুঘলকাবাদের মুখ্য ডিপো সামগ্রী অধিক্ষক তিনি। গত জানুয়ারিতে তাঁকে নোটিস ধরানো হয়। মার্চ মাসে তিনি রিভিউ কমিটির কাছে আপিল করেন। কমিটি অনুপযুক্ত জানিয়ে দেওয়ায় ডেপুটি চিফ মেটেরিয়াল ম্যানেজার তাঁকে বৃহস্পতিবার সরানোর নির্দেশ দেন। এর আগে আরও এক কর্মীকে চাকরি থেকে একই পদ্ধতিটির মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়া হয়। নির্ধারিত আরও বেশ কয়েকজনকে ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে একইভাবে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এঁদের প্রত্যেককে তিন মাসের নোটিস দেওয়া হয়েছে। এর আগে কোটায় তিন জনকে চার্জশিট ইস্যু করে উত্তর না নিয়েই ছাঁটাই করা হয়েছে। এঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কোনও রকম না জানিয়ে এঁরা লাগাতার ছুটি নিয়েছেন। রেলওয়ে এমপ্লইজ ইউনিয়ন আন্দোলনের ডাক দিলেও রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কাজকর্ম খতিয়ে দেখে কমিটি তিন মাসের নোটিসে কর্মীদের কর্মজীবন থেকে বের করে দেবে। এক্ষেত্রে তাঁর কোনও উত্তর নেওয়া হবে না।
রেল চরম ক্ষতির মুখে পড়ে বহু কর্মীকে সরানোর সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে। এজন্য ৫৫ বছর বয়স বা ৩০ বছর কর্মজীবনের যেটি আগে হবে, তাঁকেই সরানো হবে। প্রায় তিন লক্ষ কর্মী সরানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে প্রক্রিয়া শুরু হয়। কর্মী আন্দোলনে রেল দু’ধরনের কর্মপদ্ধতি নেয় ছাঁটাই প্রসঙ্গে। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ জানান, পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে অবস্থানকারী রেলগুলিতেও এই প্রক্রিয়ায় চালু করতে উদগ্রীব হয়ে রয়েছে পূর্ব রেল। আন্দোলনের পূর্বাভাসে সাময়িক ভাবে থমকে থাকলেও এই ছাঁটাই এখানেও চলবে বলে তিনি জানান।
প্রথম স্তরে রেল সুপারভাইজারদের দ্বায়িত্ব দিয়েছে, তাঁদের আওতায় থাকা কর্মীদের কাজকর্মের তথ্য সংগ্রহ করে রিপোর্ট দাখিল করতে। দক্ষতা, অফিসে হাজিরা কেমন। নির্ধারিত আইন না মেনে ছুটি নেওয়ার শীর্ষে থাকাদের কাজ থেকে সবার আগে বের করে দেবে রেল। এরপর বাৎসরিক গোপন রিপোর্ট ভাল ও খুব ভাল না হলে সেই কর্মীদের ছাঁটাই করবে দ্বিতীয় পর্যায়ে। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক অমিত ঘোষের কথায়, পূর্ব রেলেও এভাবে বাছাই পর্বের পর নামের তালিকা প্রস্তুত হয়ে রয়েছে। আন্দোলনের চাপে এখন বন্ধ থাকলেও যে কোনও মুহূর্তে তা কার্যকর হতে পারে। কারণ রাজস্থানে হলে পশ্চিমবঙ্গেও জন্য আলাদা আইন হবে না যাতে এই প্রক্রিয়া রদ হতে পারে।
[আরও পড়ুন: সাতসকালে সংসদে অগ্নিকাণ্ড, দমকলের ৭টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে]
The post অবশেষে কর্মী ছাঁটাই শুরু, পূর্ব রেলেও কোপ পড়ার আশঙ্কা কর্মী সংগঠনের appeared first on Sangbad Pratidin.