সুব্রত বিশ্বাস: কাজে থাকাকালীন ‘উপরি’ টাকা আর পকেটে রাখতে পারবেন না আরপিএফ (RPF) কর্মীরা। এর জন্য কাজে যোগ দেওয়ার সময় ‘পার্সোনাল ক্যাশে’র যাবতীয় তথ্য রেজিস্ট্রারে লিখতে হবে তাঁদের। পাশাপাশি ট্রেন এসকর্টের ডিউটি যাঁরা করবেন, তাঁরা সর্বোচ্চ দু’হাজার টাকা নিজেদের কাছে রাখতে পারবেন। যাঁরা স্টেশন, পার্সেল, ইয়ার্ড, লাইনে কাজ করবেন, তাঁরা ৭৫০ টাকার বেশি রাখতে পারবেন না। তবে প্রয়োজনে কারও কাছে এই অর্থের বাইরে বেশি টাকা থাকলে, তাঁদের সেই টাকার যাবতীয় তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে।
আরপিএফ বিভাগের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রাখতে নতুন করে এই উদ্যোগ নিল রেল (Indian Railways)। বিভাগীয়ভাবে দিন কয়েক আগে নয়া নির্দেশ দিয়েছেন আরপিএফের ডিজি কুমার রাজেশ চন্দ্র। রেজিস্ট্রারে (Registrar) টাকার পরিমাণ নথিভুক্ত করার নিয়ম আগেও ছিল। কিন্তু তাতে বিস্তর ‘ফাঁকফোকর’ ছিল বলে মত আধিকারিকদের। যেমন, আগেকার রেজিস্ট্রারে আরপিএফ কর্মীরা সংখ্যায় অর্থের পরিমাণ লিখে রাখতেন। পরে সুযোগ বুঝে শেষের সংখ্যার পিছনে বাড়তি সংখ্যা লিখে তা বাড়িয়ে দেখানো হতো। এতে ‘হেরাফেরি’র বিষয় আটকানো সম্ভব হচ্ছিল না।
[আরও পড়ুন: বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার না হলে রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি বিরোধী প্রচারের হুঁশিয়ারি টিকাইতের]
কিন্তু এবার রেজিস্ট্রারে শুধু ‘সংখ্যা’য় লিখলে চলবে না, অর্থের অঙ্ক ‘কথায়’ও লিখতে হবে। ট্রেন এসকর্ট বাহিনী ও পেট্রোল পার্টিরা সর্বোচ্চ দু’হাজার টাকা কাছে রাখতে পারবেন। সেই টাকা তাঁদের রেজিস্ট্রারে লেখার পাশাপাশি মুভমেন্ট অর্ডারেও লিখতে হবে। নিয়মিত এসব রেজিস্ট্রার পরীক্ষা করবেন কর্তারা। পাশাপাশি হঠাৎ করে কর্মীদের কাছে থাকা টাকা চেক করবেন আরপিএফ আধিকারিক ও আইভিজি-রা। রেজিস্ট্রারে দেওয়া তথ্যের বাইরে বাড়তি টাকা পাওয়া গেলে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে সঙ্গে সঙ্গে। পূর্ব রেলের আরপিএফের এক আধিকারিকের মতে, কর্মীদের কাজে স্বচ্ছতা আনতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: অন্য যুবকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় পুত্রবধূ, রাগের মাথায় দু’জনকেই কুপিয়ে খুন শ্বশুরের]
এর আগে আরপিএফ কর্মীদের নানা জায়গা নানাভাবে টাকা তুলতে দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ায় কাজে স্বচ্ছতা আনতে চায় রেল। তাই এই পরিকল্পনা। যদিও এই নির্দেশ কতটা স্বচ্ছ কাজে আসবে, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে। তবে ট্রেন এসকর্ট বাহিনীর কর্মীরা যে সচেতন হবেন, সে সম্পর্কে নিশ্চিত বিভাগীয় আধিকারিকরা। আরপিএসএফের কর্মীরা এই কাজে এলে, তাঁদেরও মানতে হবে একই নির্দেশ। এতকাল এই নির্দেশ ছিল বুকিং ক্লার্ক ও টিকিট পরীক্ষকদের জন্য। এবার জুড়ল আরপিএফও।