সুব্রত বিশ্বাস: কৃষ্ণনগর-করিমপুর প্রস্তাবিত রেলপথ এবার বাস্তবরূপ পেতে চলেছে। কিছুদিন আগে প্রস্তাবিত রেলপথের সমীক্ষা হয়েছিল। এবার জমির জন্য দুই ব্লক আধিকারিকের কাছে আবেদন জানাল রেল। চলতি বছরের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয়েছিল প্রস্তাবিত রেলপথ সমীক্ষার কাজ। পাঁচটি সমীক্ষক দল এই সমীক্ষা চালিয়েছিল। সম্প্রতি একটি দল সমীক্ষা চালিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সমীক্ষার পর জমির জন্য রাজ্যের কাছে আবেদন যাওয়ায় আশায় বুক বাঁধছে স্থানীয় মানুষজন। সমীক্ষার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, রেলমন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ কৃষ্ণনগর-করিমপুর ১১ নম্বর রাজ্য সড়কের সঙ্গে প্রায় সমান্তরাল ভাবেই তৈরি হবে। সমীক্ষার জন্য রেল ইতিমধ্যে দু’কোটি টাকা বরাদ্দও করেছিল। রেলপথে এই সংযোগের জন্য গনিখানের সময় থেকেই কথা চলছে। ২০০৬ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। ২০১০ সালের বাজেটে উল্লেখ, অধীর চৌধুরী বলেন, বহরমপুর-করিমপুর লিঙ্কের সমীক্ষা হবে। মহুয়া মৈত্রও দাবিতে সরব হয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন: আন্তঃরাজ্য ও আন্তর্জাতিক পাচারের করিডর হয়ে উঠছে শিলিগুড়ি! ৬১ লক্ষের সোনা-সহ এবার গ্রেপ্তার ২]
করিমপুর এই লাইনের প্রান্তিক স্টেশন, ফলে তেমন বাণিজ্যিক পরিবহণ সম্ভব না হওয়ায় রেলমন্ত্রক এতে দীর্ঘ সময় আগ্রহ দেখায়নি। গত বছর ১৮ অক্টোবর রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর সঙ্গে দেখা করেন মহুয়া মৈত্র। দীর্ঘ বৈঠক করেন এবং চিঠিতে ফের একই প্রস্তাব দেন তিনি। ফেসবুকেও মহুয়া লিখেছিলেন, রেলমন্ত্রক আমার এই ডাকে সাড়া দিয়ে দু’কোটি টাকা ব্যয়ে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রেললাইনের সার্ভের কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নদিয়ার প্রান্তিক জনপদ করিমপুরে রেল চালানোর দাবি বহু দিনের। তা না হওয়ার ফলে কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়কের পরিবহণের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল।
বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ১৯০৫ সালে ইস্টার্ন বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার ক্যাপ্টেন সি এল ম্যাগনিয়াক এবং মি রেডিস প্রথম কৃষ্ণনগর থেকে বহরমপুর ভায়া করিমপুর রেলপথের সমীক্ষা করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবায়িত হয়নি। করিমপুরবাসীর আক্ষেপ, প্রত্যেক নির্বাচনের আগে নেতাদের বক্তৃতায় ফিরে ফিরে এসেছে এই প্রসঙ্গ। কিন্তু ধামাচাপা পড়েছে সমস্ত ফাইল। তাঁদের কথায়, ‘‘এই রেলপথ চালু হলে জেলার আর্থিক উন্নয়নও হবে।’’