সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুই দশক পরে তালিবানের উপর থেকে 'সন্ত্রাসবাদী' তকমা তুলে নিল রাশিয়া। ২০০৩ সালে মস্কোয় নিষিদ্ধ করেছিল তালিবানকে। অবশেষে রুশ সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিল, সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হল। যদিও সংবাদমাধ্যমের দাবি, গত বছর থেকেই রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার প্রসিকিউটর জেনারেল ইগর ক্রাসনভের আরজির শুনানি ছিল। রুদ্ধদ্বার কক্ষে শুনানি শেষে জানিয়ে দেওয়া হয় তালিবানের উপর থেকে 'জঙ্গি' তকমা তুলে নিচ্ছে মস্কো। ২০২৪ সালেই রুশ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তালিবান প্রতিনিধিদের কূটনৈতিক আলোচনা হয়েছিল। সেই সময় থেকেই ইঙ্গিত মিলছিল, এমনটাই করতে চলেছে রাশিয়া।
২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হলে সেদেশের দখল ফের চলে যায় তালিবানের হাতে। ‘কাবুলিওয়ালার দেশে’ শুরু হয়েছিল তালিবান ২.০। দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটি বছর। এখনও পর্যন্ত আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্বের কোনও দেশ। বলে রাখা ভালো, ২০১৫ সাল থেকেই গোপনে তালিবানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিল মস্কো। এমনকী অতীতে তারা তালিবানকে অস্ত্র সরবরাহ করত, এমন গুঞ্জনও রয়েছে। ২০২২ সালের মার্চে তালিবান-রাশিয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
এই অবস্থায় গত বছরের শেষে রাশিয়ার নিম্নকক্ষে পাশ হওয়া এক নতুন আইনকে ঘিরে আশায় বুক বাঁধা শুরু করে তালিবান। কী বলা হয়েছে এই আইনে? আসলে ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল। এর মধ্যে অবশ্যই ছিল তালিবান। নয়া আইনে বলা হয়েছে, সেই সময় যাদের সন্ত্রাসবাদী হিসেবে দাগিয়ে দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল, কিছু ক্ষেত্রে তা তুলে নেওয়া হবে। অবশ্যই নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে। আর এই তালিকায় ছিল তালিবানও। অবশেষে সেটাই করল রাশিয়া। রুশ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার বিষয়টিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে আমেরিকার 'শত্রু'দের প্রতি নরম মনোভাব দেখিয়ে পালটা চাপ তৈরি করতে চাইছে রাশিয়া, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।