সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকায় ফের নিশানায় ভারতীয় ছাত্র। মার্কিন মুলুকে পড়তে গিয়ে শিকাগো থেকে নিখোঁজ হায়দরাবাদের যুবক! প্রায় এক সপ্তাহের উপর ধরে ওই পড়ুয়ার কোনও খোঁজ পাচ্ছে না তাঁর পরিবার। প্রবল উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে পরিবারের সদস্যদের। ওই যুবককে খুঁজে পেতে পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে শিকাগোর কনস্যুলেট জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (CGI)।
এএনআই সূত্রে খবর, নিখোঁজ পড়ুয়ার নাম রূপেশ চন্দ্র চিন্তাকিন্দি। বছর ছাব্বিশের এই যুবক উইসকনসিনের কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়তে গিয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, গত ২ মে শেষবারের মতো বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন রূপেশ। কিন্তু তার পর থেকেই আর যোগাযোগ করা যায়নি তাঁর সঙ্গে। চিন্তিত হয়ে রূপেশের রুমমেটদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁর বাবা।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের ‘চিনা’ বন্দরের কাছে আততায়ীর গুলিতে মৃত্যু ৭ শ্রমিকের, ‘জঙ্গি হামলা’, দাবি বালোচিস্তানের]
সেখান থেকে তিনি জানতে পারেন, টেক্সাসে কারও সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রূপেশ। কিন্তু কার সঙ্গে দেখা করার কথা সেনিয়ে কিছুই জানে না রুমমেটরা। তার পর থেকেই অফলাইন হয়ে যান রূপেশ। এনিয়ে রূপেশের বাবা সদানন্দম সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, দ্রুত ছেলের খোঁজ পেতে পুলিশ এবং মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডিকেও একটি চিঠি লিখেছিলেন। রূপেশকে খোঁজার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার জন্য বিদেশ মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন রেড্ডি। এবং শিকাগোয় সিজিআইয়ের কাছেও ওই নিখোঁজ ভারতীয় পড়ুয়ার জন্য সাহায্য চেয়েছেন।
এদিকে, শিকাগোর কনস্যুলেট জেনারেল অফ ইন্ডিয়া ওই পড়ুয়াকে খুঁজতে মার্কিন পুলিশের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছে। এনিয়ে সিজিআই এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছে, '২ মে থেকে ভারতীয় ছাত্র রূপেশ চন্দ্র চিন্তাকিন্দি নিখোঁজ। তাঁকে নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আশা করছি, রূপেশের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করা সম্ভব হবে। ' কিন্তু সময় যাচ্ছে উৎকণ্ঠা আরও বাড়ছে হায়দরাবাদে থাকা রূপেশের পরিবারের।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন হায়দরাবাদের যুবক আবদুল মহম্মদ। তাঁর পরিবারের দাবি ছিল, মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ চেয়ে ক্রমাগত ফোন করা হচ্ছে। এমনকী হুমকি দেওয়া হচ্ছে, দাবি মতো টাকা না দিলে নাকি যুবকের কিডনি বেছে দেওয়া হবে। এক মাস নিখোঁজ থাকার পর এপ্রিল মাসেই ক্লিভল্যান্ড থেকে আবদুলের দেহ উদ্ধার করেছিল মার্কিন পুলিশ। যা ছিল আমেরিকায় একাদশতম ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যু।
চলতি বছরের গোড়া থেকেই মার্কিন মুলুকে মৃত্যু হয়েছে একের পর এক ভারতীয় ছাত্রের। শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই সেখানে প্রাণ হারিয়েছিলেন চার পড়ুয়া। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল আমেরিকার মাটিতে ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে। এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল নয়াদিল্লি। তার পরই গত ফ্রেব্রুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, ‘জাতি বা ধর্মের ভিত্তিতে হিংসার কোনও যুক্তি নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসব বরদাস্ত করা হবে না। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তাঁর প্রশাসন কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন। কোনও রকম হিংসা রুখতে চেষ্টা করছি। যারা এই হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করছে, তাদেরকেও বার্তা দিচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। যারা হিংসা ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ কিন্তু কোথায় সেই তৎপরতা? কোথায় রয়েছে নিরাপত্তা? ফের এই ঘটনায় উঠছে এরকম একাধিক প্রশ্ন। এর মাঝেই আরেক ভারতীয় ছাত্রের নিখোঁজ হওয়ার খবর মিলল।