সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নয়া দিশার সূচনা করে বৈঠক সারলেন ভারত ও রাশিয়ার দুই রাষ্ট্রপ্রধান| নয়াদিল্লিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়।
পূর্ব সূচি মেনেই বৃহস্পতিবার বিশেষ বিমানে সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ মস্কো থেকে দিল্লি এসে পৌঁছান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর সঙ্গে এসেছে রাশিয়ার উচ্চপর্যায়ের এক সরকারি প্রতিনিধি দল। তাতে আছেন কূটনীতিক, প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ, যুদ্ধ কৌশলবিদ ও প্রযুক্তিবিদরা। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং ভারতীয় কূটনীতিকরা।
পুতিনকে অভিবাদন জানান ভারতের তিন বাহিনীর প্রধান। পুতিনকে প্রথমে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ পুতিনের বিশাল কনভয় পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান মোদি। দু’জনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ঘরোয়া কথাবার্তা হয়। দু’জনেই ছিলেন খোশ মেজাজে। মোদির সঙ্গে এক টেবিলে বসে নৈশভোজ সারেন পুতিন। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার সুষমা স্বরাজ ও পুতিনের ছবি দিয়ে টুইট করেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী ও সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ।’
শুক্রবার সকাল এগারোটা নাগাদ পুতিন ও রুশ প্রতিনিধি দল ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। ১৯তম রুশ-ভারত শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন পুতিন। চুক্তি স্বাক্ষরের পর রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন।
ওই বৈঠকে ভারতের সঙ্গে প্রস্তাবিত ঐতিহাসিক অস্ত্রচুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন পুতিন ও মোদি। এই মহাচুক্তির দিকে তাকিয়ে রয়েছে চিন, পাকিস্তান, আমেরিকা-সহ ইউরোপীয় দেশগুলি। কারণ ফ্রান্সের কাছে অত্যাধুনিক রাফাল বিমান কেনার পর এই অস্ত্র চুক্তি গোটা এশিয়ার সামরিক সক্ষমতার ভারসাম্যটাই বদলে দেবে। ভারত আরও অদম্য সামরিক শক্তিশালী দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। চিন, পাকিস্তানের কাছে এই ঘটনা আশঙ্কার। প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে পাঁচটি সুবিশাল এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি হবে। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন পুতিন ও মোদি।
আগেই আমেরিকা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, রাশিয়ার সঙ্গে এই ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি করে চিন আমেরিকার কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। তেমনি ভারত যতই আমেরিকার বন্ধু দেশ হোক না কেন, রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে জড়ালে ভারতের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করবে ওয়াশিংটন। তবে মোদি সরকার আগেই ঠিক করেছিল, দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস নয়। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও হুমকি অগ্রাহ্য করেই রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও যাবতীয় অস্ত্র কেনা হবে।
মহাকাশে মানুষ পাঠাতে এবং মঙ্গলগ্রহে অভিযান চালাতে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে সবরকমভাবে সাহায্য করবে রুশ মহাকাশ সংস্থা। ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন তৈরিতে, ভারতে আরেকটি পরমাণু চুল্লি নির্মাণে, কুড়ানকুলামের পরমাণু চুল্লিটির সম্প্রসারণ, সুখোই যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে রাশিয়া। সেই সংক্রান্ত চুক্তিও স্বাক্ষরিত হতে চলেছে শুক্রবার।
[ট্রাম্পের চেয়ে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য পুতিন ও জিনপিং!]
The post মোদি-পুতিনের নৈশভোজে আরও মজবুত সম্পর্ক, এস-৪০০ নিয়ে বড় ঘোষণা আজ appeared first on Sangbad Pratidin.