স্টাফ রিপোর্টার : ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে ডামাডোলের মধ্যেই বিস্ফোরক বিবৃতি সভাপতি পিটি ঊষার। আইওএ-র যুগ্ম সচিব তথা এআইএফএফ সভাপতি কল্যাণ চৌবে তাঁকে পদচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে ঘুরিয়ে অভিযোগ তুলেছেন ঊষা। সঙ্গে কল্যাণের বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে আইওএ-র দায়িত্বপ্রাপ্ত সিইও হিসাবে নিজেকে তুলে ধরা এবং আইওএ-র সংবিধান লঙ্ঘনের মতো অভিযোগও তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি আইওএ-র কর্মীদের চিঠি দিয়ে এই কিংবদন্তি অ্যাথলিট জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে কল্যাণের কোনও নির্দেশ মানার কোনও প্রয়োজন নেই।
গত ৩ অক্টোবর আইওএ-র এসজিএম ডেকে নোটিশ জারি করেছেন ঊষা। ২৫ অক্টোবর সেই এসজিএম হওয়ার কথা। অভিযোগ, এরপরই নিজেকে আইওএ-র দায়িত্বপ্রাপ্ত সিইও হিসাবে তুলে ধরে সেই এসজিএমে নতুন অ্যাজেন্ডা যোগ করার চেষ্টা করছেন কল্যাণ। বৃহস্পতিবার আইওএ-র প্যাডে দেওয়া নিজের বিবৃতিতে ঊষা লিখেছেন, ‘আমি বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি যে কল্যাণ চৌবে নিজেকে আইওএ-র দায়িত্বপ্রাপ্ত সিইও হিসাবে দেখিয়ে ২৫ অক্টোবরের এসজিএমে নতুন অ্যাজেন্ডা যোগ করার কথা জানিয়েছেন। এটা একইসঙ্গে বেআইনি এবং আইওএ-র সংবিধান লঙ্ঘন। কারণ বর্তমানে আইওএ-র সিইও রঘুরাম আইয়ার যাঁকে ১৫ জানুয়ারি নিয়োগ করা হয়েছে। আইওএ-র কার্যনির্বাহী কমিটির কিছু সদস্য তাঁর এই নিয়োগকে অস্বীকার করার পাশাপাশি গত ৯ মাস বেতনও আটকে রেখেছেন। তবুও আইয়ার সিইও হিসাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। মনে রাখতে হবে, তাঁর এই নিয়োগকে আইওএ এবং ক্রীড়া মন্ত্রক অনুমোদন দিয়েছে।’
সংবিধানের ধারা উল্লেখ করে ঊষা জানিয়েছেন, এসজিএম ডাকা বা তার অ্যাজেন্ডা ঠিক করার ক্ষমতা শুধুমাত্র সভাপতির হাতে থাকে। আর তিনি এই ক্ষমতা কল্যাণকে দেননি। কল্যাণের বিরুদ্ধে সংবিধান ভাঙার আরও অভিযোগ তুলেছেন ঊষা। তাঁর দাবি, আইওএ-র সাধারণ সভার অনুমতি ছাড়াই কল্যাণ ভারতীয় তাইকোন্ডো ফেডারেশনকে অনুমোদন দিয়েছেন। ঊষা আরও লিখেছেন, ‘কিছুদিন আগে আমাকে একজন ক্রীড়া প্রশাসক আমাকে অনুরোধ করেন এসজিএম বাতিল করার জন্য। তিনি আমাকে জানান, এসজিএমে কার্যনির্বাহী কমিটির এক ডজন সদস্য আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারেন। কল্যাণের এই অবৈধ নোটিশের পর আমার মনে হচ্ছে, আইওএ-র কাজকে ব্যহত করার জন্য একটা চক্র সক্রিয় হয়েছে।’ তবে সভাপতি হিসাবে তিনি যে সর্বদা আইওএ-তে স্বচ্ছভাবে কাজ চালিয়ে যাবেন, তাও উল্লেখ করেছেন ঊষা।
শুধু এই বিবৃতিই নয়, আইওএ কর্মীদের চিঠি দিয়েও ঊষা জানিয়ে দিয়েছেন এখন থেকে কল্যাণের কোনও নির্দেশ মানার প্রয়োজন নেই। সেখানেও কল্যাণের নিজেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিইও হিসাবে তুলে ধরা এবং সিইও হিসাবে রঘুরাম আইয়ারের নিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন ঊষা। সঙ্গে লিখেছেন, ‘সব কর্মীকে বলা হচ্ছে, এখন থেকে কল্যাণের কোনও নির্দেশ মানার প্রয়োজন নেই। আইওএ-র কাজকর্ম সংক্রান্ত যাবতীয় নির্দেশ সভাপতি বা সিইও-র মতো স্বীকৃত ব্যক্তিরাই দেবেন। এই নির্দেশ অমান্য করলে তা শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসাবে গণ্য করা হতে পারে। প্রয়োজনে কর্মীরা সিইও বা সভাপতির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।’ এমনকি যে যে ব্যাঙ্কে আইওএ-র অ্যাকাউন্ট আছে, তাদেরও কল্যাণের নির্দেশ না মানার বিষয়টি জানানোর জন্য আইওএ-র ফিনান্স বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন ঊষা।