কলকাতা নাইট রাইডার্স- ১৯.৩ ওভারে ১৩১ অলআউট (সুনীল নারিন ৩৪, যুজবেন্দ্র চহল ১৬/৩)
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর- ৯.৪ ওভারে ৪৯ রানে অলআউট (কেদার যাদব ৯, ক্রিস ওকস ৬/৩)
কলকাতা নাইট রাইডার্স ৮২ রানে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খাতায় কলমে ম্যাচ ছিল কেকেআর বনাম আরসিবি-র। কিন্তু আসলে যেন ছিল কেকেআর বনাম কোহলির। ভারতীয় ক্রিকেটে শুরু হয়েছে কোহলি যুগ। নতুন যুগের স্বাদ তারিয়ে তারিয়েই উপভোগ করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। আইপিএল-এর আপাত বিভাজনও সেখানে তেমন দাগ কাটতে পারেনি। ফলে কোহলিকে নিয়ে উন্মাদনা ছিলই। এদিকে ইডেন মানেই তো কলকাতার জন্য বুকভরা সমর্থন। ফলে চলতি আইপিএলের সবথেকে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মনে মনে একটি সমীকরণ যেন গোপনে ঠিক করেই নিয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। ভাল খেলুন কোহলি। কিন্তু জয় আসুক কলকাতার ঘরেই। দিনের শেষে সত্যি হল দ্বিতীয়টিই। ইডেনকে উৎসবে ভাসিয়ে কোহলি অ্যান্ড কোং-কে ৮২ রানে হারিয়ে দিলেন গম্ভীররা। বিরাটরা আউট মাত্র ৪৯ রানে! যা কিনা আইপিএলের গত দশ বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রান।
গুজরাট ম্যাচের আগে থেকেই কেকেআর বনাম আরসিবি ম্যাচকেই বলা হচ্ছিল আইপিএল-এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। এমনকী টিকিটের জন্যও শুরু হয়েছিল হাহাকার। আর হবে নাই বা কেন! ইডেন গার্ডেন্সে যে পা রাখতে চলেছিলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি এবং টি-টোয়েন্টি দুনিয়ার দুই ‘দানব’ ক্রিস গেইল ও এবি ডিভিলিয়ার্স। কথায় বলে, সকাল দেখেই গোটা দিন কেমন যাবে তার একটা পূর্বাভাস পাওয়া যায়। তেমনই টিকিটের চাহিদা দেখেই বোঝা গিয়েছিল জনসমুদ্রে থইথই করবে ইডেন। তবে সব পূর্বাভাস সত্যি হয় না। কেকেআর ব্যাটসম্যানদের ফর্ম দেখে কে জানত, খেলার ফল এমন হবে! গোড়াতেই বাধ সেধেছিল গোমড়া আকাশ। কিছুটা দেরিতেই শুরু হয় খেলা। খানিকটা চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের কপালে। সে ভাঁজ আরও গভীর করেছিল কেকেআর ব্যাটসম্যানদের রানের হার।এদিন টস জিতে কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠান বিরাট কোহলি। সুনীল নারিন এদিনও চেনা মেজাজে শুরু করেছিলেন। কালবৈশাখীর মেজাজের মতোই এদিন শহর উপভোগ করল তাঁর ঝোড়ো ব্যাটিং। একটা সময় আরসিবি বোলাররা যেন কিছুতেই তল খুঁজে পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ১৭ বলে ৩৪ রানে থামে নারিন ঝড়। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৬টি চার ও একটি ছয়। কিন্তু তাও শেষরক্ষা হল না। ব্যাটসম্যানদের খালি হাতে যাওয়া আসা দেখতে দেখতে আশঙ্কার মেঘ জমছিল। শেষমেশ ১৩১ রান আসে গম্ভীরদের ঘরে। টার্গেট মোটে ১৩২। যে টিমে কোহলি-গেইল, ডি’ভিলিয়ার্স আছেন, তাঁদের কাছে এ রান আর কতটুকু! এমনটাই ভেবেছিলেন বহু দর্শক। দুরুদুরু বুকে শুরু হয়েছিল অপেক্ষা।
[পর্নসাইটে নিজের ছবি দেখে আঁকতে উঠলেন এই মডেল!]
কিন্তু কে না জানে ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা! এদিন যেন ক্রিকেট দেবতা আরও একবার সে কথা প্রমাণ করলেন। কে জানত খালি হাতে ফিরতে হবে কোহলিকে! কে জানত, গেইল-ডি’ভিলিয়ার্সরা একে একে এভাবে পরাস্ত হবেন! দুই অঙ্কের ঘরেও পৌঁছাতে পারলেন না তাঁরা। এদিন গঙ্গার বাতাসেই যেন লেখা ছিল কেকেআর-এর জয়ের আখ্যান। আর সে উপকথার চরিত্র হয়ে উঠলেন কুল্টার-নাইল, ওকস, উমেশ যাদবরা। ইডেনের জনসমুদ্র তখন প্রতি মুহূর্তে ফুঁসে উঠছে। প্রিয় দলকে ভরিয়ে দিচ্ছে সমর্থনে। আর তার ভিতরেই একমাত্র রূপকথার নায়ক হয়ে উঠলেন নাইট বোলাররা। বলার মতো রান করতে পারেননি আরসিবি-র কোন ব্যাটসম্যানই।পরপর সাজালে আস্ত একটি মোবাইল নম্বরও হয়ে যেতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এই বলাবলি।
উল্টোদিকে, আগুন ঝরিয়েছেন কুল্টার-নাইল, উমেশ যাদব, ক্রিস ওকস, কলিন ডি গ্রান্ডহোমরা। কুল্টার-নাইল, ওকস এবং কলিন তিনটি করে উইকেট পান। একটি উইকেট নিয়েছেন উমেশ।
[ভিক্ষা দেবেন না, চাঁদিফাটা গরমেও রাস্তায় বসে আর্জি বৃদ্ধের]
পরিসংখ্যান বলছে এ ম্যাচ আসলে বোলারদেরই। এমনকী ব্যাট হাতে নাইটদের মধ্যে যিনি সর্বোচ্চ রান করলেন, তিনি সুনীল নারিন। এরপর যেন একে একে ম্যাজিকম্যান হয়ে উঠলেন প্রত্যেক বোলারই। আসলে কোথাও যে এ ম্যাচের জন্য বাড়তি তাগিদ জমা হয়েছিল তা এদিন নাইটদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই স্পষ্ট। ফিল্ডিংয়ে ভুল প্রায় নেই। বলের লাইনেও কোথাও ভুলচুক হয়নি। যা ভুল হল তা গেইল, ডি’ভিলিয়ার্সদের। আর তাই কখনও ধরা পড়লেন উত্থাপার গ্লাভসে, কখনও বা কুল্টার-নাইলের হাতে। গুজরাটকে দশ উইকেটে হারানোর পর এটাই সবথেকে বড় জয় নাইটদের। গুমোট গরমের পর হালকা বৃষ্টি স্বস্তি দিয়েছিল শহরবাসীকে। সেই স্বস্তির আবহে যে ফুরফুরে বাতাস বইয়ে দিলেন নাইটরা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
[বায়ুসেনা কর্মীকে হেনস্তা, আটক ৩]
The post নাইট পেসারদের সুইংয়ে ইডেনে বিধ্বস্ত বিরাটবাহিনী appeared first on Sangbad Pratidin.