স্টাফ রিপোর্টার: দীনেশ কার্তিকের জায়গায় ইয়ন মর্গ্যানকে (Eoin Morgan) অধিনায়ক হতে দেখে প্রচুর সোনালি বেগুনি সমর্থকরা ভেবেছিলেন যে, অধিনায়ক বদলের সঙ্গে সঙ্গে টিমের ভাগ্যও বুঝি এবার পালটাবে। কিন্তু হায়! টিমের নেতৃত্বের ব্যাটন বিশ্বজয়ী ইংল্যান্ড অধিনায়ক মর্গ্যানের হাতে গেল ঠিকই। কিন্তু রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে টিমের ভাগ্য পালটাল না। কুৎসিত হারই কেকেআরের কপালে লেখা থাকল। তবে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে নামার আগে বড়সড় একটা স্বস্তি পেয়েছে নাইট শিবির। সুনীল নারিনের অ্যাকশন নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছিল, তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। ফলে নারিনের মাথা থেকে নির্বাসনের খাঁড়া উঠে গেল। ফের নিশ্চিন্তে তাঁকে খেলাতে পারবে কেকেআর।
মুশকিল হচ্ছে, ক্যাপ্টেন মর্গ্যানের হাতে বিশেষ সময়ও নেই। মুম্বই ম্যাচের বিপর্যয়ের আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে ফের নেমে পড়তে হচ্ছে নাইট রাইডার্সকে (KKR)। আজ, রবিবার ডেভিড ওয়ার্নারের সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে। ধারে ও ভারে কেকেআরের চেয়ে কিছুটা পিছিয়েই সানরাইজার্স (SRH)। কিন্তু তবু ডেভিড ওয়ার্নার আছেন। জনি বেয়ারস্টো আছেন। কেন উইলিয়ামসন আছেন। আছেন একজন রশিদ খান। সবচেয়ে দুশ্চিন্তার, কাগজে-কলমে এগিয়ে থাকলে তো চলবে না। মাঠে পারফর্ম করে দেখাতে হবে। সেটা করছে কোথায় কেকেআর? বিশেষ করে টপ অর্ডার?
[আরও পড়ুন: বাবার পথেই পুত্র, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার মসনদে অরুণ জেটলির ছেলে]
নতুন নাইট অধিনায়কও যা নিয়ে বেশ রুষ্ট। মুম্বই ম্যাচের ময়নাতদন্ত করতে বসে মর্গ্যান সাংবাদিক সম্মেলনে বলছিলেন, “আমরা পারিনি বললে কিছুই বলা হয় না। আমাদের টপ অর্ডার বেশ কিছু ভুলভ্রান্তি করেছে। দুর্ধর্ষ বোলিং করেছে মুম্বই। ওরা বুঝিয়ে দিয়েছে, কেন টুর্নামেন্টের (IPL 13) সেরা টিমগুলোর একটা ওরা।” সঙ্গে বিশ্বজয়ী অধিনায়কের দ্রুত সংযোজন, “আমাদের উন্নতি করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। টুর্নামেন্টের অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। যা করার এখনই করতে হবে। আর টিমকে বুঝতে হবে যে, পরিস্থিতি অনুযায়ী, প্রতিপক্ষ অনুযায়ী, টিমের ব্যাটিং অর্ডার পালটাবে। এক একটা টিমের ক্ষেত্রে প্ল্যানিং এক এক রকম হয়। তাই ব্যাটিং অর্ডার পালটাবে।” নারিন আসায় আজ তাঁকে উপরে ব্যাট করতে দেখা যেতে পারে।
কার্তিক দায়িত্ব ছাড়ার পরই মুম্বই ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবে নেমে পড়তে হয়েছে মর্গ্যানকে। খুব বেশি সময় তিনি পাননি টিমকে গুছিয়ে নেওয়ার। কিন্তু অধিনায়ক বদলের সঙ্গে টিমের মানিয়ে নিতে খুব সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন মর্গ্যান। “আমার তো মনে হয়, খুব সহজ ভাবেই ব্যাপারটা হল। কার্তিক যেটা করল, সাহস লাগে সেটা করতে। অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়ে সহ-অধিনায়কত্ব করা খুব সহজ নয়,” বলে দিয়েছেন মর্গ্যান। “কার্তিক ছাড়ার পরেই আমার হাতে টিমকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগটা এল। কিন্তু এখানে একটা কথা রাখি। আমি অধিনায়ক হতে পারি। কিন্তু আমাদের টিমে প্রচুর লিডার আছে। টুর্নামেন্টজুড়ে যারা কাজ করবে।”
[আরও পড়ুন: শিলিগুড়িতে চাই আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আন্দোলনে শামিল ক্রিকেটপ্রেমীরা]
শুনতে ভাল। কিন্তু কেকেআরের সমস্যা দিন দিন যে ভাবে বাড়ছে, শেষ পর্যন্ত টিম প্লে-অফ যেতে পারবে কি না, বোঝা যাচ্ছে না। কেকেআর এখনও চার নম্বরে। কিন্তু টপ অর্ডার ভাল রকম চিন্তা ছড়াচ্ছে। শুভমান গিল ভাল শুরু করেও বড় রান করতে পারছেন না। রাহুল ত্রিপাঠি চেন্নাই সুপার কিংসের ৮১ করার পর আর কুড়ি পেরোননি। নীতিশ রানা টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রভাবই ফেলতে পারেননি। দীনেশ কার্তিকের ব্যাটিং পজিশন বারবার বদলাচ্ছে। কিন্তু তাঁর রান ভাগ্য বদলাচ্ছে না। ৮ ম্যাচের ৮ ইনিংসে কার্তিকের রান মাত্র ১১২! গড় ১৪! আন্দ্রে রাসেল এবং ইয়ন মর্গ্যান–দু’জন যথেষ্ট হেভিওয়েট নাম। কিন্তু নাম অনুযায়ী কোনও পারফরম্যান্স দু’জনের ব্যাট থেকে পাওয়া যায়নি। বোলার রাসেল দারুণ করছেন। কিন্তু ব্যাট হাতে বিধ্বংসী রাসেলকে আটটা ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পরেও পাওয়া যায়নি। উলটে শর্ট বলের সামনে তাঁকে যেমন অসহায় দেখাচ্ছে, বলাবলি চলছে যে, রাসেলের ওষুধ বেরিয়ে গেল কি না? মনে রাখা দরকার, হায়দরাবাদের হাতে এক্সপ্রেস গতির কোনও পেসার নেই। কিন্তু ভাল কিছু মিডিয়াম পেসার আছে। এবং আছেন রশিদ খান। যিনি আইপিএলে
দারুণ ফর্মে।
এদিকে আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে কার্যত মরণ-বাঁচন লড়াইয়ে নামছে পাঞ্জাব। প্রতিপক্ষ মহা শক্তিশালী মুম্বই। তাঁদের সামনে আবার অন্য চ্যালেঞ্জ। আসলে গতকালই রোহিতদের কাছ থেকে লিগের শীর্ষস্থান ছিনিয়ে নিয়েছে দিল্লি। মুম্বই আজ চাইবে সিংহাসন পুনরুদ্ধার করতে।