সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ইসলামিক বিপ্লব’-এর সময় থেকেই ইরান-আমেরিকা সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। তেহরানে নেই কোনও মার্কিন দূতাবাসও। ইরানের বিরুদ্ধে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রম্প (Donald Trump)। এহেন পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউসে পটপরিবর্তন প্রক্রিয়ায় তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে তেহরান।
[আরও পড়ুন: ‘পাক সেনায় বিদ্রোহের বীজ রোপণ করছেন শিয়াল নওয়াজ শরিফ’, তীব্র আক্রমণ ইমরানের]
শনিবার, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি সাফ বলেন, “আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে ইরানকে ভয় দেখানো যাবে না। আমরা কখনওই মাথা নত করব না। আমরা আশা করছি বিগত তিন বছরে আমেরিকা শিক্ষা নিয়েছে। এবার আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতো কাজ করবে ওয়াশিংটন। বিগত তিন বছর ধরে আমাদের দেশের মানুষ আর্থিক সন্ত্রাসবাদের শিকার। যারা নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে তারা ভুল করছে।” ইরানের শীর্ষ আধিকারিকদের মতে, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে সম্পর্ক মজবুত করার চাইতে আমেরিকার আণবিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপের উপর নজর রাখছে তেহরান। কারণ সেনেটে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগুরু হওয়ায় বিডেন জিতলেও আমেরিকার ইরান নীতি খুব একটা পালটাবে না।
উল্লেখ্য, অক্টোবর মাসে আমেরিকার (USA) তীব্র আপত্তি সত্বেও প্রথাগত অস্ত্রের আমদানি ও রপ্তানি সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা উঠে যায় ইরানের (Iran) উপর থেকে। ইসলামিক দেশটির আণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা রুখতে প্রায় ১৩ বছর আগে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (UNSC)। অক্টোবরের ১৮ তারিখ থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় এবার আন্তর্জাতিক আইন মতে মিসাইল, ট্যাংক, সামরিক হেলিকপ্টার বা অন্যান্য প্রথাগত (আণবিক নয়) যুদ্ধের হাতিয়ার আমদানি বা রপ্তানি করতে পারবে ইরান। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিষেধাজ্ঞার জেরে নাজেহাল ইরান কিছুটা স্বস্তি পায় ২০১৫ সালে। ওই বছর আমেরিকার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মঞ্চের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে তেহরান। ওই চুক্তিতে আণবিক অস্ত্র নির্মাণের চেষ্টা পরিত্যাগ করার বদলে ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে রাজি হয় আন্তর্জাতিক মহল। Joint ‘Comprehensive Plan of Action’ (JCPOA) শীর্ষক ওই চুক্তির ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের মাধ্যমে ইরানের উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ২০১৮ সালে তেহরানের বিরুদ্ধে আণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টার অভিযোগে ওই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় আমেরিকা।