সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সালটা ১৯৮৭। ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখ। অভিনেত্রী ও নব্য রাজনৈতিক জয়ললিতার একা হয়ে যাওয়ার দিন। ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখই অভিনেতা এবং দক্ষ রাজনৈতিক এম জি রামচন্দ্রন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাজনৈতিক দীক্ষাগুরু তথা জয়ার ভীষণ কাছের মানুষ এম জি আর-এর চলে যাওয়া আম্মার জীবনে তৈরি করেছিল গভীর শূন্যতা। এমজিআরের মৃত্যুতে তামিলনাড়ুও হারিয়েছিল মহান এক জননেতা তথা বিচক্ষণ রাজনীতিবিদকে।
কিন্তু কথায় বলে না, যাঁদের ভাগ্য ঈশ্বর এক সুতোয় বেঁধে রেখেছেন, তাঁদের আলাদা করে এমন সাধ্য আছে কার? আর তাই মনে হয়, জীবনের শেষ মুহূর্তেও এমজিআরের দেখানো পথেই হাঁটলেন আম্মা। এমজিআরের মতোই সেই ডিসেম্বর মাসেই জাগতিক মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন। রাজনৈতিক দীক্ষাগুরু এম জি রামচন্দ্রনের সঙ্গে জয়ললিতার সম্পর্ক নিয়ে লোকমুখে নানা কথা ফেরে। শোনা যায়, এমজিআরের স্ত্রী জয়াকে একেবারেই পছন্দ করতেন না। শুধু তাই নয়, এম জি আর যেদিন মারা যান, জয়ার ভাগ্যে সেদিন তাঁর পরিবারের তরফ থেকে জুটেছিল চরম লাঞ্ছনা এবং অপমান। কিন্তু কোনওদিনই হেরে যাওয়ার পাত্রী ছিলেন না জয়া। শত অপমান সহ্য করেও গুরুর মরদেহ আগলে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ২১ ঘণ্টা। প্রকাশ্যে একটিবারের জন্যও ফুঁপিয়ে ওঠেননি।
কিন্তু ভাগ্যদেবতার অঙ্গুলিহেলন যেন অন্য গল্পই লিখেছিলেন সবার প্রিয় আম্মার জন্য। আর তাই শত অপমান এবং লাঞ্ছনার সম্মুখীন হয়েও হেরে যাননি সাহসী মেয়েটি। এম জি আরের সুযোগ্য রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী হয়ে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন নিজেকে। এক বার নয়, ছ’বার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে জয়াকেই বেছে নিয়েছেন তামিলনাড়ুর মানুষ। আর তাই প্রিয় আম্মার মৃত্যুতে যেন স্বজন হারিয়েছেন তাঁরা। চোখের জলে ভাসছে গোটা রাজ্য। তাঁদের সব প্রার্থনা বিফলে গিয়েছে তা যেন মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা।
তবু এতকিছুর পরেও আম্মা যেন শেষযাত্রাতেও কিস্তিমাত করলেন। দীক্ষাগুরুর মতো ডিসেম্বর মাসেই চলে গেলেন সকলকে ছেড়ে। আম্মা আর এমজিআরের শেষ সমীকরণটাও এক সুতোয় বাঁধা রয়ে গেল…
The post বিদায়বেলাতেও যেন গুরুর পথেই হাঁটলেন আম্মা appeared first on Sangbad Pratidin.