অর্ণব আইচ: পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে খুনের চেষ্টা ছিল মূল লক্ষ্য। ঘটনার ২৫ দিনের মধ্যে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি (Nawsad Siddique, )-সহ কুড়ি জনের বিরুদ্ধে এই মর্মে চার্জশিট দাখিল করল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। এদিকে, পুলিশের উপর হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় নিউ মার্কেটের একটি মামলায় নওশাদক সিদ্দিকিকে ফের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে (PC) পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় আইএসএফের (ISF) সমাবেশ ঘিরে ধুন্ধুমার হয়। পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে আইএসএফের বিরুদ্ধে। আহত হন বহু পুলিশ আধিকারিক ও পুলিশকর্মী। মধ্য কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট ও নিউ মার্কেট এলাকায় হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি-সহ কুড়ি জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তের শেষে হেয়ার স্ট্রিট থানার মামলায় ২৫ দিনের মাথায় চার্জশিট (Chargesheet) পেশ করল পুলিশ।
৩২ পাতার এই চার্জশিটে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা, সংঘর্ষ, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, খুনের চেষ্টা, পুলিশের উপর হামলা, পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আঘাত করা, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে যে, এক সার্জেন্টকে এমনভাবে মারা হয় যে, তাঁর হাতের হাড় সরে গিয়েছে। বউবাজার থানার ওসি ও অতিরিক্ত ওসির আঘাত গুরুতর। ইচ্ছাকৃতভাবেই উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁদের এমনভাবে আঘাত করা হয়, যে তাঁরা খুনও হতে পারতেন। পুলিশের অভিযোগ, এই পুরো হামলায় মদত জুগিয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকি।
[আরও পড়ুন: টানাপোড়েন শেষ, রাজ্যপালের সচিব পদ থেকে নন্দিনী চক্রবর্তীকে অব্যাহতি দিল নবান্ন]
এদিন নওশাদ ও আইএসএফের নেতা-কর্মীদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। পুলিশের পক্ষে নিউ মার্কেট থানার একটি মামলায় নওশাদ সিদ্দিকিকে ফের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। সরকারি আইনজীবী জানান, তদন্তে আরও নতুন তথ্য উঠে আসছে। তাঁকে ফের জেরার প্রয়োজন। অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তাঁদের জামিনের আবেদন জানিয়ে আদালতে আবেদনে জানান, একটি বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছিল মাত্র। যেখানে তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে, সেখানে আবার অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়ার কী প্রয়োজন? যাঁরা হাসপাতালে ভরতি ছিলেন, তাঁরাও ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁদের আটকে রাখা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: রাজ্য বাজেট ২০২৩: ক’টি নতুন প্রকল্প, কোন খাতে কত বরাদ্দ? দেখে নিন একঝলকে]
অন্য এক আইনজীবী প্রশ্ন তুলে বলেন, ”এতদিন পর নিউ মার্কেট থানার মামলায় ফের হেফাজতে চাওয়া হচ্ছে কেন? পুলিশ কি এতদিন ধরে ঘাস কাটছিল?” সরকারি আইনজীবী জবাব দেন, ”বর্ষা এখনও আসেনি, তাই ঘাসও বড় হয়নি যে কাটতে হবে। পুলিশ ঘাস কাটেনি। কিন্তু তদন্ত করে দেখেছে যে, ফের নওশাদকে জেরার জন্য হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন।” দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে নওশাদ ও তাঁর সঙ্গীদের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।